মিয়ানমারে কার্যক্রম পরিচালনার প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে নতুন চারটি বিদেশী ব্যাংক। রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, বিদেশী বিনিয়োগের পথ সুগম করতেই দেশটির সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। খবর এএফপি।
সরকার অনুমোদিত নতুন ব্যাংকগুলো হলো ভিয়েতনামের ব্যাংক ফর ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, তাইওয়ানের ই.সান কমার্শিয়াল ব্যাংক, দক্ষিণ কোরিয়ার শিনহান ব্যাংক ও ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। সেন্ট্রাল ব্যাংক অব মিয়ানমারের বরাত দিয়ে গতকাল এ কথা জানিয়েছে গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার।
এ নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে অনুমোদন পাওয়া মোট বিদেশী ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩টি। অবশ্য এর সবই যে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছে, তা নয়। নতুন শাখা চালুর ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি ব্যাংককে এখনো বিভিন্ন বিধিনিষেধ মেনে চলতে হচ্ছে।
কয়েক দশকের মধ্যে প্রথম বিদেশী ব্যাংক হিসেবে ২০১৫ সালের এপ্রিলে মিয়ানমারে কার্যক্রম শুরু করেছে জাপানের টোকিও-মিত্সুবিশি ইউএফজে। এছাড়া জাপানের সুমিতোমো মিতসুই ব্যাংকিং করপোরেশন ও সিঙ্গাপুরের ওভারসি-চায়নিজ ব্যাংকিং করপোরেশন এরই মধ্যে সেবা খাতটিতে যুক্ত হয়েছে।
সামরিক শাসনের পাঁচ দশকে মিয়ানমারের ব্যাংকিং খাত বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য রুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। ১৯৬২ সালে ক্ষমতা দখলের পর জান্তা সরকার দেশটির সব ব্যাংকই জাতীয়করণ করে। সরকারের এ পদক্ষেপের ফলে দেশটির অর্থনৈতিক কাঠামো অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ে। জনগণের আস্থা হারায় স্থানীয় ব্যাংকগুলো। অনেকেই ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। বরং নগদ অর্থের ওপর তাদের নির্ভরশীলতা অনেকখানি বেড়ে যায়।
তবে সাম্প্রতিক নির্বাচনের পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা অধিকাংশে প্রত্যাহারের ফলে দেশটিতে বিদেশী বিনিয়োগের বেশ সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন বিদেশী ব্যাংক এখন মিয়ানমারে শাখা চালুর জন্য সরকারের অনুমোদন চাইছে। অবশ্য আবেদনকারীদের মধ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ব্যাংকগুলোর সংখ্যাই বেশি।
বিশ্বব্যাংকের মতে, অর্থায়ন সংকটই মিয়ানমারের স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চলার পথের প্রধান অন্তরায়। সঙ্গত কারণে দেশটির বিদায়ী সামরিক সরকার ও অং সান সু চির এনএলডি উভয়ই স্থানীয় ব্যবসায় মূলধনের প্রবাহ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।