পিঁপড়েরা সব সময় সারি বেঁধে চলে। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, চলমান এক সারির পিপড়ার সামনের পিঁপড়াটি যে দিক ছুটে চলছে অন্যরাও তাকে নির্ভুলভাবে অনুসরণ করছে। হঠাৎ যদি পিঁপড়ের লাইনের ভেতর দিয়ে কাঠি কিংবা হাত দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন, তবে দেখবেন পেছনের পিঁপড়েগুলো দিশেহারা হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ এলোমেলোভাবে ঘুরবে ওরা। তারপর হয়তো আবার লাইন করে চলবে। কিন্তু নতুনভাবে লাইন সেট করতে বেশ কিছুক্ষণ সময় নেয় ওরা। লাইন ভাঙার পর সামনের সাথীদের দেখতে পারছিল পিঁপড়েরা, তবুও কেন এই সাময়িক বিশৃঙ্খলা। দেখতে না পেলে অবশ্য কথা ছিল।
আসলে পিঁপড়ে খাদ্যের জন্য প্রায় সারাদিন ঘোরাফেরা করে। বাসা ছেড়ে পাড়ি দেয় বহু পথ। ওদের চলায় যদি শৃঙ্খলা না থাকে থাকে তা হলে পথ হারিয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে পথ চিনে বাড়ি ফেরা কঠিন হয়ে যায়। সত্যি বলতে কি পিঁপড়ের অত্যন্ত শৃঙ্খল প্রাণি। তাই পথ চলার সময় সারি বেঁধে বা লাইন করে চলে। এজন্য ওরা চোখের দৃষ্টিশক্তির ওপর নির্ভর করে বসে থাকে না। দৃষ্টি শক্তির ওপর নির্ভর করে চললে হিসেবটা অন্যরকম হতো। কেউ যদি পিঁপড়ের সারিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে হয় তখন ওরা একটু ঘুরে চলে যেত। কিছুক্ষণের জন্য বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত না।
আসলে পিঁপড়ে চলার সময় রাস্তার ওপর এক ধরনের হরমন ছড়িয়ে যায়। সুগন্ধি হরমন। এই হরমন থাকে পিঁপড়ের শরীরের পেছন দিকে। হুলের ঠিক নিচে। পিঁপড়ে যখন চলে তখন তার হুল মাটি স্পর্শ করে চলে। হুলের নিচ থেকে তখন হরমন নিঃসৃত হয়ে ছড়িয়ে যায় মাটিতে। পেছনের পিঁপড়ে হরমনের গন্ধ শুঁকে শুঁকে অগ্রমগামীর পথ অনুসরণ করে। এতে পিঁপড়েদের পথ হারানোর কোনও ভয়ই থাকে না।