বিদেশে ফের উত্তর কোরিয়ার দুই ডাক্তারের রহস্যমৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হলেও, এই দুই ডাক্তারের মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না তদন্তকারীরা।
গত শনিবার রহস্যজনক ভাবেই মৃত্যু হয় কম্বোডিয়ায় কর্মরত উত্তর কোরিয়ার ওই দুই ডাক্তারের। ঘটনার সময় দুই ডাক্তারই মত্ত অবস্থায় ছিলেন। নেশা কাটাতে তাঁদের স্ত্রীরা স্বামীদের ইঞ্জেকশনও দেন এর পরেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন ওই দুই ডাক্তার। দু’জনেরই হার্ট অ্যাটাক হয়। জানা গিয়েছে, মৃত দুই ডাক্তারের স্ত্রীও পেশায় চিকিত্সক। ওই দুই ডাক্তারের শরীরে ইঞ্জেকশন হিসেবে ঠিক কী পুশ করা হয়েছিল, তা নিয়েই রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশ শুরুতে মদের বিষক্রিয়ার কথা বললেও, পরে মৃত্যু ‘রহস্যজনক’ বলেই উল্লেখ করে। মৃত দুই ডাক্তারেরা নাম হাইওং চাং (৫৬) ও চোল কি মুন (৫০)।
কম্বোডিয়ার সংবাদমাধ্যমসূত্রে খবর, শনিবার টুওল কর্ক জেলার একটি ক্লিনিকে ওই ২ ডাক্তারকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। মূলত উত্তর কোরিয়ার ডাক্তাররাই বসেন ক্লিনিকটিতে। ঘটনার দিন সেখান জনা ১২ উত্তর কোরিয়ান নাগরিক ছিলেন। মিডিয়ার অভিযোগ, সাংবাদিকদের সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সে কারণে সন্দেহ আরও বাড়ে।
অটোপসি রিপোর্ট যদিও বলছে, দু-জনেরই হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু। স্ত্রীদের বক্তব্য, দুজনেই খুবই নেশা করেছিলেন। তাঁরা যখন দেখেন, শরীরের তাপমাত্রা খুবই বেশি। ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট। হার্টবিটও ছিল অস্বাভাবিক রকম। দুর্বল পালস। মদের বিষক্রিয়া নষ্ট করতে তাঁরা ইঞ্জেকশন দেন। তার একঘণটার মধ্যেই দু’জনের মৃত্যু হয়।
উত্তর কোরিয়ার ৫০ হাজারেরও বেশি নাগরিক বিদেশে কর্মরত। তাঁদের আয়ের একটা মোটা অংশ দিতে হয় কিং জং উনের সরকারকে। শ্রমিক রপ্তানিই উত্তর কোরিয়া সরকারের আয়ের উত্স। সেখানে ঘনঘন উত্তর কোরিয়ার নাগরিকের মৃত্যু কিং জং উনের সরকারের কাছে দুশ্চিন্তার কারণ।
এর আগে উত্তরপূর্ব নাইজেরিয়ায় ২০১৩-য় তিন জন নর্থ কোরিয়ান ডাক্তারকে খুন করা হয়। পরে জানা যায়, বোকো হারাম জঙ্গিদের হাতেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। গত বছর মে মাসে উত্তর কোরিয়ার এক ডাক্তারকে সস্ত্রীক লিবিয়ায় অপহরণ করে ইসলামিক স্টেট।