ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তাবিত সিরিজ ছিল ভারতের। তবে, গুরুদাসপুরে সন্ত্রাসী হামলার অজুহাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজ খেলতে রাজি নয় ভারত। পাকিস্তানও নাচোড়বান্দা। সিরিজটা আদায় করে ছাড়বেই। যার ফলে দু’দেশের ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে ক্রমাগত তিক্ততা বাড়ার প্রেক্ষিতে, ভিন্ন পথে হাঁটতে যাচ্ছে ভারত। দেশটির ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই আগামী ডিসেম্বরে আয়োজন করতে যাচ্ছে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ। যেখানে বাকি দুই প্রতিপক্ষ হবে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান।
মূলতঃ হঠাৎ করেই এসেছে খবরটা। আগে থেকে শোনা যাচ্ছিল জিম্বাবুয়ে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে ডিসেম্বরে বাংলাদেশে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিসিসিআই হঠাৎ নড়ে চড়ে বসায় একটি মিনি এশিয়া কাপেরও সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে এখন। পাকিস্তানের একটি সংবাদ সংস্থা এআরওয়াই নিউজ জানিয়েছে, বিসিসিআই আগামী ডিসেম্বরেই এই ত্রিদেশীয় সিরিজটি আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। সেখানে বাকি দুটি দল হতে যাচ্ছে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ।
তবে যেহেতু নভেম্বরের শেষভাগে শুরু হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শেষ হতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি নাগাদ সময় লেগে যাবে, সেহেতু সিরিজটি অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ডিসেম্বরের দ্বিতীয়াংশেই।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে বিডিক্রিকেট ডটকম জানিয়েছে, দুবাইতে আইসিসি বৈঠক চলাকালে বিসিসিআই সচিব অনুরাগ ঠাকুর সাক্ষাৎ করেছেন পিসিবি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খানের সঙ্গে। সেই সাক্ষাতেই অনুরাগ ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজনের প্রস্তাব দেন পিসিবি চেয়ারম্যানকে। তৃতীয় দল হিসেবে বাংলাদেশকে নেয়ার কথা বলেন তিনি। তবে শাহরিয়ার খান, তাদের প্রস্তাবিত সিরিজটি ছাড়া আর কোন আলোচনা করতেই রাজি নন বলে জানা গেছে। অনুরাগ ঠাকুর শেষ পর্যন্ত ত্রিদেশীয় সিরিজের দরজা খোলা বলেই আপাতত সেই সাক্ষাৎ শেষ করেছেন।
প্রস্তাবিত ত্রিদেশীয় সিরিজের ব্যাপারে এখনও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে কোন প্রস্তাব আসেনি বলেও জানা গেছে।
প্রসঙ্গতঃ আগামী ডিসেম্বরে নিরপেক্ষ ভেন্যু আরব আমিরাতে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের সিরিজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে সন্ত্রাসী হামলার ইস্যুতে পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারতের অবস্থান এবং দু’দেশের রাজনৈতিক বৈরী পরিবেশের মধ্যে সিরিজটি আর অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের জাতীয় নিরাপত্তা পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আজিজও জানিয়ে দিয়েছেন, দু’দেশের মধ্যকার বর্তমান সম্পর্কের ভিত্তিতে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের আদর্শ সময় এখনও হয়নি।
এমনই যখন অবস্থা তখন বিসিসিআইয়ের পরিকল্পনায় বিকল্প হিসেবে উঠে এলো বাংলাদেশের নাম। ক্রিকেটীয় সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতেই সম্ভবত কৌশলে পাকিস্তানের সঙ্গে একটি খেলার আয়োজন করতে চায় বিসিসিআই। আর সেটা বাংলাদেশকে নিয়েই। তবে, বাংলাদেশের জিম্বাবুয়েকে দেয়া একটি প্রস্তাব এখনও অপেক্ষমান। আগামী মাসেই জিম্বাবুয়ের আশার কথা রয়েছে বাংলাদেশে। এরপর বিপিএল। এতটা কঠিন সূচীর ফাঁদে পড়ে কিভাবে ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নেবে মাশরাফিরা, তা বিসিবির বক্তব্য পেলেই জানা যাবে।