হজযাত্রীর নাম-ঠিকানা অনলাইনে নিবন্ধনের পর ব্যাংকে মোয়াল্লেম ফি জমা দিতে হয়। এ প্রক্রিয়া শেষে নিবন্ধনকৃতদের পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যুর পর সংশ্লিষ্ট হজযাত্রী সৌদি আরবে যান হজব্রত পালনে। কিন্তু এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করেই নাজনীন সুলতানা নামে এক বাংলাদেশি ঢাকার ইমিগ্রেশন পার হয়ে হজ পালনের উদ্দেশ্যে পৌঁছে যান সৌদি আরবে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। জেদ্দা বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। পরে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
জেদ্দা বিমানবন্দর সূত্র জানায়, গত ২২ আগস্ট রাত ১২টার দিকে সাউদিয়া এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট (নম্বর-এসভি ৫৬০১) জেদ্দা বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ওই ফ্লাইটের হজযাত্রীদের সঙ্গে একজন বাংলাদেশি নারী হজকার্ড, পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়াই জেদ্দা বিমানবন্দরে নামেন। তিনি জেদ্দা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন অতিক্রমকালে ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। এ সময় তার কাছে মমতাজ বেগম নামে এক নারীর বোর্ডিং কার্ডের একটি অংশ পাওয়া যায়। জেদ্দা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ওই নারীকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এ সময় তিনি নিজেকে নাজনীন সুলতানা বলে পরিচয় দেন। জেদ্দা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে কোনো ধরনের তথ্য উদ্ধার করতে না পেরে জেদ্দার হজ টার্মিনালের বাংলাদেশি হজ অফিসের কর্মকর্তাদের তলব করেন। হজ অফিসের কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গেলে জেদ্দা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ওই নারীর বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চায়।
এ সময় হজ অফিসের কর্মকর্তারা হজ অফিসের ওয়েবসাইটসহ যাবতীয় কাগজপত্র পরীক্ষা করে ওই নারী সম্পর্কে কোনো ধরনের তথ্য দিতে পারেননি। তারা ওই নারীকে হজযাত্রী বলেও অস্বীকার করেন। এরপরই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সাউদিয়া এয়ারলাইনসকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করে এবং ফিরতি ফ্লাইটে তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হজ অফিসের কর্মকর্তারা বলেন, আটককৃত নারীর কাছে যে বোর্ডিং পাস পাওয়া গেছে তাতে মমতাজ বেগম লেখা রয়েছে। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার নাম নাজনীন সুলতানা। কিন্তু তার কাছে কোনো পাসপোর্ট, হজকার্ড বা তার চেহারার সঙ্গে ওয়েবসাইটে থাকা কোনো নারীর মিল পাওয়া যায়নি। তার কোনো মাইরাম ও গাইড ছিল না। কোনো ধরনের কাগজপত্র, পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকিট ছাড়াই ওই নারীকে বিমানে ওঠার ব্যবস্থা করে দিয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। ওই নারীকে বহন করার দায়ে সাউদিয়া এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষকে জরিমানা করা হয়েছে।