কোরিয়ায় বিদেশীদের কাছে সবচেয়ে পরিচিত এলাকার একটি সিউলের ইথেউওন। বিভিন্ন দেশের রেস্টুরেন্ট, কফিশপ, বার, আন্তর্জাতিক মানের হোটেল, শপিং সুবিধা সবই আছে ‘ইথেউওন ইন্টারন্যাশনাল স্ট্রিট’ নামে পরিচিত ১.৪ কিলোমিটারের এই জায়গায়। ১৯৯৭ সালে ইথেউওন প্রথমবারের মত সিউলের পর্যটন রোডের স্বীকৃতি পায়। কোরিয়ায় কয়েক বছর ছিলেন অথচ ইথেউওন যাননি এমন বিদেশী খুঁজে পাওয়া কঠিন।
জুসন রাজবংশের আমলে জাপানিজরা প্রথম ইথেউওনে বসবাস শুরু করে। পরবর্তীতে কোরীয় যুদ্ধের পর আমেরিকান সৈন্যদের জন্য সেনানিবাস করা হয়। ১৯৬০ সাল থেকে আমেরিকান সৈন্যদের পাশাপাশি অন্যান্য বিদেশীরাও ইথেউওনে বসবাস শুরু করে। বিদেশীদের জন্যই মূলত গড়ে উঠে শতশত বিদেশী রেস্টুরেন্ট, বার, কফিহাউজ ইত্যাদি। সিউলের অন্যান্য এলাকা থেকেও অনেকেই বিদেশী খাবার স্বাদ নেওয়ার জন্য ইথেউওনে যায়।
১৯৭৪ সালে নির্মিত সিউল কেন্দ্রীয় মসজিদের কারণে ইথেউওন মুসলিমদের কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শত শত বিদেশী মুসলিম প্রতিদিন সিউল কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজ আদায় করতে যান। দিনদিন কোরিয়ান পর্যটকদের ভিড়ও বাড়ছে। সিউল কেন্দ্রীয় মসজিদকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশীসহ সহ বিভিন্ন মুসলিম দেশের নাগরিকদের একটা কমিউনিটিও গড়ে উঠেছে। মসজিদের পাশাপাশি বাংলাদেশীদের কাছে ইথেউওন সর্বাধিক পরিচিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কল্যাণে। প্রত্যেক প্রবাসী বাংলাদেশীকেই পাসপোর্ট নবায়নসহ প্রবাস জীবনের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের শরণাপন্ন হতে হয়।
বিদেশীদের কাছে বর্তমানে ইথেউওন যেন সিউলের মধ্যে আরেক সিউল, রাজধানীর মধ্যে আরেক রাজধানী। ছোট এই এলাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার বিদেশী বিনোদন, ভোজনবিলাস, প্রার্থনা এবং আড্ডার জন্য জন্য আসে। শনি ও রবিবার ইথেউওনের রাস্তাগুলোয় থাকে মানুষ আর মানুষ।
বাংলাদেশী, ইন্ডিয়ান, পাকিস্তানি রেস্টুরেন্ট ছাড়াও পৃথিবীর অনেকে দেশের শতশত রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। এছাড়া হালাল রেস্টুরেন্ট, হালাল মার্ট, ট্রাভেল এজেন্সী, মোবাইল শপ, বিভিন্ন দেশের পণ্য কেনাকাটার জন্যও ইথেউওন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ইথেউওন গ্লোবাল সেন্টার বিদেশীদের কাছে ইথেউওনকে জনপ্রিয় করার জন্য বছরের বেশ কয়েকটি ফেস্টিভালেরও আয়োজন করে থাকে।