ফ্রান্সে গিয়ে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন জাসদ সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তাকে রাজাকার পরিবারের সন্তান আখ্যা দিয়ে প্রায় ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশের সহযোগিতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। শনিবার বিকেলে প্যারিসের সা ক্লাউডস্থ হোটেল রেডিসন ব্লুতে এ ঘটনা ঘটে।
ফ্রান্সের প্যারিস থেকে বাংলাদেশি সাংবাদিক এনায়েত হোসেন সোহেল এ তথ্য জানিয়েছেন।
সোহেল জানান, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু গত শুক্রবার সরকারি সফরে ফ্রান্সে যান। তিনি হোটেল রেডিসনে অবস্থান করেন। ওই দেশে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে মন্ত্রীর।
এদিকে তথ্যমন্ত্রীর আগমনের খবর পেয়ে ফ্রান্স বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জন্য তাকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা শনিবার বিকেল ৩টা থেকে হোটেল রেডিসনের সামনে জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে নেতাকর্মীরা ডিম হাতে নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করে। দিতে থাকেন হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান।
এ সময় তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফ্রান্স আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্ধারিত মতবিনিময় হওয়ার কথা ছিল। তাই আওয়ামী লীগ নেতারাও হোটেল রেডিসনের সামনে আসেন। এ সময় বেড়ে যায় উত্তেজনা।
অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহযোগিতা চায়। বন্ধ করে দেয় মূল ফটক। পরিস্থিতি সামাল দিতে মুহূর্তেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ এসে ঘিরে রাখে হোটেল এলাকা। সার্চ করতে থাকে নেতাকর্মীদের।
এছাড়াও বিএনপি নেতাকর্মীকে স্থান ত্যাগের অনুরোধ করে পুলিশ। পুলিশের অনুরোধে চার ঘণ্টা অবস্থান করার পর বিক্ষোভকারীরা স্থান ত্যাগ করে। এ সময় ফ্রান্স আওয়ামী লীগের কিছু নেতা হোটেলে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ তাদেরকেও বাধা দেয়।
এরপর ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের সিনিয়র কর্মকর্তা হজরত আলী খান এসে আওয়ামী লীগ নেতাদের জানান, তথ্যমন্ত্রীর শরীর খারাপ। তিনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন না। এমন সংবাদ শোনে আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের সঙ্গে আনা ফুলের তোড়াটি হজরত আলী খানের হাতে দিয়ে চলে যান। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার কারণ জানতে চাইলে বিএনপি নেতারা বলেন, ইনু রাজাকার পরিবারের সন্তান। এ রাজাকারের জন্যই স্বাধীনতার পরপর বাংলাদেশ অশান্ত হয়েছিল। নিজের অপকর্ম ঢাকতে সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা রটনা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপিকে ধ্বংস করার পায়তারা করছেন। এটা কখনো দেয়া যাবে না। তথ্যমন্ত্রী ফ্রান্সে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে সেখানেও কঠোর অবস্থান নেয়া হবে বলে জানান বিএনপি নেতারা।
এদিকে বিক্ষোভ ও হোটেল ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নেন- ফ্রান্স বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাইফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এম এ তাহের, সাংগঠনিক সম্পাদক খান জালাল, সাবেক সভাপতি সিরাজুর রহমান, সহ-সভাপতি সিরাজ উদ্দীন, মহিলা দলের সভাপতি ও ফ্রান্স বিএনপির সহ-সভাপতি মমতাজ আলো, ইলিয়াছ মুক্তি পরিষদের আহ্বায়ক মুফিজ আলী, ফ্রান্স বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ, ফরিদ মিয়া প্রমুখ।
তবে ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। তারা বলেন, বিদেশের মাটিতে এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়।