মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই মালয়েশিয়া যাওয়ার নামে কাউকে টাকা না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ঢাকা সফররত মালয়েশিয়ার একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ পরামর্শ দেন।
রোববার (৯ আগস্ট) দুপুরে মালয়েশিয়া সরকারের চার সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় আসে। এ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক মুস্তাফা বিন ইব্রাহীম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি জুলকিফলি ইয়াকুব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি শাহিল ইসমাইল ও একই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জামরি বিন মাত জেইন। মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শহীদুল ইসলামও তাদের সঙ্গে ঢাকায় এসেছেন।
মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে বৈঠকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, সেখানে লোক পাঠানোর পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি জানিয়ে দেন, যারা সরকারিভাবে নিবন্ধন করেছিলেন, তাদের মধ্য থেকেই মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানো হবে। এর বাইরে আবার যারা নতুন করে নিবন্ধন করবেন, তারাও যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কম অভিবাসন মূল্যে শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে সে মূল্য এখনও নির্ধারিত হয়নি।
মালয়েশিয়ায় আগামী তিন বছরে ১৫ লাখ শ্রমিকের চাহিদা আছে জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, এ বিবেচনায় আমাদের সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো উন্নততর করছি, যেন সেখান থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে শ্রমিকদের পাঠাতে পারি। কৃষি, কারখানা, গৃহস্থালিসহ বিভিন্ন খাতে শ্রমিক নেবে মালয়েশিয়া। এই শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন হবে ৯শ’ রিংগিত, বাংলাদেশি টাকায় সাড়ে ১৭ হাজারেও বেশি।
মালয়েশিয়ায় লোক নেওয়ার বিষয়ে সেখানকার এবং ও বাংলাদেশের বিভিন্ন গোষ্ঠী তৎপর- এ বিষয়টি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘নোবডি ক্যান বাই মি।’
সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ১৭ আগস্ট ঢাকা ছাড়বে প্রতিনিধি দলটি। আলোচনা হলেও শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে কোনো ধরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে না। এ বিষয়ে চুক্তি হবে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট (জিটুজি) পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে শুরু করে মালয়েশিয়া। সে অনুযায়ী শুধু সরকারিভাবে মালয়েশিয়ার ‘প্ল্যান্টেশন’ খাতে শ্রমিক পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু ওই প্রক্রিয়ায় দুই বছরে মাত্র অাট হাজার শ্রমিক পাঠাতে সক্ষম হয় সরকার।
এরপর জিটুজি পদ্ধতি সংস্কার করে এতে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
দেশটিতে নতুন করে যাওয়া প্রত্যেক শ্রমিককে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে, এরপর তিনি আরও একবছর কাজ করার সুযোগ পাবেন।(বাংলানিউজ২৪)