এ সময় প্রবাসীদের সহায়তায় কামরুলের গাড়ি ও এর প্লেট নম্বর আবিষ্কার করেন তাঁরা। কামরুলের গাড়িটি এ সময় তাঁর সৌদি মালিকের বাড়ির ফটকে অবস্থান করছিল। ওই বাড়িতে দারোয়ানের কাজ করতেন কামরুল। ১৫ বছর ধরে তিনি কর্মরত রয়েছেন সেখানে। বাড়ির সামনে মানুষ-জনের ভিড় দেখে সৌদি মালিক এ সময় বেরিয়ে আসেন। তাঁকে কামরুলের ছবি দেখিয়ে রাজন হত্যার বিবরণ দেওয়া হলে সৌদি মালিক তাৎক্ষণিকভাবে কামরুলকে ধরিয়ে দেন। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৭টায় জেদ্দা কনস্যুলেট জেনারেল ভবনে নেওয়া হয় তাকে। ততক্ষণে জেদ্দা কনস্যুলেটে প্রবাসীদের ভিড় জমে যায়। স্থানীয় সংবাদকর্মীরা রাজন হত্যা নিয়ে নানা প্রশ্ন করতে থাকেন তাকে।
কামরুল জানান, বাড়িতে চোর ধরা পড়েছে- এ খবর পেয়ে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে দেখে একটি ছেলেকে বেঁধে রাখা হয়েছে। তার চারপাশে চৌকিদারসহ অনেকেই ছিল। চৌকিদার ছেলেটিকে বেদম পেটাচ্ছে। এ সময় তিনিও ছেলেটিকে পিটিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। তিনি জানান, তার উদ্দেশ্য ছিল না ছেলেটিকে মেরে ফেলার। চোর বলেই তাকে প্রহার করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পিটিয়ে তারপর তিনি নিজের ঘরে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরই তাকে জানানো হয় ছেলেটি মারা গেছে। পরে মৃতদেহটি ফেলে দেন একটি ময়লার স্তুপের নিচে।
কামরুল আরো জানান, ঘটনার পরই তিনি দ্রুত বাংলাদেশ ত্যাগ করে সৌদি আরবে চলে আসেন। শিশু রাজনকে প্রহার করতে ৯ জনের মধ্যে তার ভাইয়েরা ছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। জানান, তার কোনো ভাই রাজনকে পেটায়নি। প্রশ্ন করা হয়, তাহলে পুরো ঘটনাটি সে একা করেছিল কিনা। কামরুল বলে, চৌকিদারসহ কিছু মানুষ-জন। ছেলেটি মৃত্যুযন্ত্রণায় পানি পান করতে চেয়েছিল দেওয়া হয়নি কেন- জিজ্ঞেস করলে কামরূল বলে, চৌকিদার বলেছে পানি পান করলে এ সময় মারা যাবে বিধায় দেওয়া হয়নি।
এদিকে, জেদ্দা কনস্যুলেটের প্রথম সচিব জানান, কামরুল ইসলামকে কূটনৈতিক পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন তিনি জেদ্দার জামেয়া থানায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে যত দ্রুত সম্ভব তাকে দেশে পাঠানো হবে। কালের কণ্ঠ।