Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

rumman২৯ জুন সকাল ১১ টা ২০ মিনিট। চট্টগ্রাম নৌবাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে প্রশিক্ষণ বিমান এফ-৭ নিয়ে আকাশে উড়াল দেন পাইলট তাহমিদ রুম্মান। উড়াল দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। ঘটনার পর থেকেই বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ড দুইটি জাহাজ, পাঁচটি হেলিক্প্টার নিয়ে যৌথভাবে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গেল নয় দিনেও সন্ধান মেলেনি পাইলট তাহমিদের। এখনো জীবিত তাহমিদের আশায় জহিরুল হক ঘাঁটিতে প্রতীক্ষায় আছে তাহমিদের স্বজনেরা।

স্বজনদের বিশ্বাস তাহমিদ এখনো জীবিত আছে। সাঁতার কেটে আশেপাশে কোনো দ্বীপ কিংবা মাছ ধরার নৌকায় আশ্রয় নিয়েছে তাহমিদ। নেটওয়ার্ক না থাকায় হয়তো কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। আশেপাশের দ্বীপ ও মাছ ধরার নৌকাগুলোতে খোঁজ নিলেই পাওয়া যাবে তাহমিদকে! এমন বিশ্বাস নিয়েই যে ঘাঁটি থেকে বিমান নিয়ে উড়াল দিয়েছিল তাহমিদ সে ঘাঁটিতেই গত ৯ দিন ধরেই প্রতীক্ষায় তাহমিদের পরিবার।

chardike-ad

নিখোঁজের পর থেকেই জহুরুল হক ঘাঁটিতে প্রিয় সন্তানের ফেরার প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে রয়েছেন মা ঝর্ণা আকতার এবং বাবা আবদুল কাদের চৌধুরী। মা-বাবার মতো ছোট বোন লামিয়া সাবিন ও ভাই আদনান তৌহিদ ও তামজিদও বিশ্বাস করনে তাদের বড় ভাই তাহমিদ জীবিত আছেন।

তাহমিদের ছোট ভাই সেনাবাহিনীর সৈনিক তৌফিক বলেন, ভাইয়ার অপেক্ষায় থেকে থেকে আব্বা-আম্মা প্রায় পাগল হয়ে গেছেন। কারও সাথে কোন কথা বলছেন না। আটদিন ধরেই জহুরুল হক ঘাঁটিতে অপেক্ষা করছেন। সেখানে সেহরি ও ইফতার করছেন। আমাদের বিশ্বাস ভাইয়া এখনো বেঁচে আছেন। আমাদের ধারণা ভাইয়া সাঁতার কেটে আশেপাশে কোনো দ্বীপ কিংবা মাছ ধরার নৌকায় আশ্রয় নিয়েছেন। নেটওয়ার্ক না থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। আশেপাশের দ্বীপ ও মাছ ধরার নৌকাগুলোতে খোঁজ নিলেই ভাইয়াকে পাওয়া যাবে। আমরা আশপাশের দ্বীপ ও মাছ ধরার ট্রলারগুলোতে খোঁজ নিতে বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা ও ভাইয়ার সহকর্মীদের জানিয়েছি। তারা খোঁজ করবে বলে জানিয়েছে।

জহুরুল হক ঘাঁটির স্কোয়াড্রন লিডার জোয়ার্দার সিরাজুল হক জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে তাহমিদের খোঁজে বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ড যৌথভাবে পাঁচটি হেলিকপ্টার, দুটি জাহাজ অভিযান শুরু করে । ঘটনার দিন বিকেল তিনটার দিকে বিমানের কিছু ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেলেও বিমানটির পুরো অংশ পাওয়া যায়নি। গত আটদিনে আমরা এক মিনিটের জন্যও অভিযান বন্ধ রাখিনি। গত দুই দিন ধরে আমরা অভিযান পরিবর্তন করে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তল্লাশি চালাচ্ছি। ডুবুরির মাধ্যমেও সাগরের তলদেশে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আমরা তাহমিদের খোঁজে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাহমিদকে না পাওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে বলেও জানান বিমানবাহিনীর এ কর্মকর্তা।

সাগরের নোনা জলের সাথে মা ঝর্ণা বেগমের চোখের নোনা জলও মিছে গেছে জহুরুল হক ঘাঁটিতে। যে ঘাঁটি থেকে আকাশে উড়াল দিয়েছিল ছেলে তাহমিদ, গত ৯ দিন ধরে সে ঘাঁটিতেই ছেলের প্রতীক্ষায় মা। মায়ের মতো বাবা, বোন ও দুই ভাইও আছে একই প্রতীক্ষায়। প্রিয় স্বজন ফিরে আসার প্রতীক্ষায়। কিন্তু তাহমিদ কি জানে সে কথা?

এমদাদুল সুমন