আসন্ন হজ মওসুমে বাংলাদেশি ২৫ হাজার হজযাত্রীর অনলাইন ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় গত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জন্য অনলাইনে আবেদনের চূড়ান্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল।
অনুসন্ধানে জানা গেছে- আট শতাধিক হজ এজেন্সি ও তাদের এজেন্টরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রায় লক্ষাধিক হজযাত্রীর অনলাইনে আবেদনের কাজ শেষ করতে পারলেও অজ্ঞতার কারণে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে হাজার হাজার হজ গমনেচ্ছুক যাত্রীর নাম, ঠিকানাসহ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তে ভুল করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হজ এজেন্সিজ অব বাংলাদেশ (হাব) এর একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, সঠিক সংখ্যা বলা সম্ভব না হলেও এ সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ হাজারের কম হবেনা।
তারা জানান, সৌদি সরকার চলতি বছর নতুন নিয়মে অনলাইনের ভিসা প্রদান করবে। শর্তানুসারে প্রত্যেক হজ এজেন্সি সৌদি আরবে ভাড়া ও হোটেল ভাড়া পরিশোধের কাগজপত্র ও যাত্রীদের প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্তসহ সৌদি দুতাবাসে ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করবেন।
সৌদি সরকার প্রদেয় তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাইয়ে সন্তুষ্ট হলে অনলাইনেই ভিসা ইস্যু করবে। নাম, ঠিকানা বা অন্য কোন তথ্যে সামান্য ভুল থাকলেও অনলাইন ভিসা ইস্যু করবেনা।
বিভিন্ন এজেন্সি বিষয়টি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেছে। ইতিমধ্যেই তারা হাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জন হজে যাওয়ার কথা রয়েছে। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ৮৩৭টি এজেন্সির মাধ্যমে ৯৭ হাজার ৭৫৮ জন যাবেন।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন হজ এজেন্সি সৌদি আরবে বাড়ি ও হোটেল ভাড়া করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ অনলাইন ভিসার জন্য আবেদন শুরু করেছেন। কিন্তু বেশ কিছু এজেন্সি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আবেদনপত্রে ভুল তথ্য দেয়ায় আবেদন করতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে- হজ এজেন্সি মালিকদের সঙ্গে শনিবার বৈঠকে বসছেন ধর্মমন্ত্রণালয়ের সচিব ড. চৌধুরী মো. বাবুল হাসান। আসন্ন হজের ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে আশকোনা হাজি ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ড. আবুল সালেহ মোস্তফা কামাল, পরিচালক (হজ) ইতিমধ্যেই সকল এজেন্সির স্বত্ত্বাধিকারী, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অংশীদারদের সভায় উপস্থিত থাকতে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।
হাবের সভাপতি ইব্রাহিম বাহার বৃহস্পতিবার রাতে জানান, শনিবার হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ধর্ম সচিবের সঙ্গে তাদের বৈঠক রয়েছে। সেখানে তিনি জটিল এ সমস্যাটি নিয়ে কথা বলবেন।
তিনি জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয় গত ২২ ফেব্রুয়ারি অনলাইনে আবেদন বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন তারা কিছু সময়ের জন্য সে লাইনটি খুলে দিলে বিভিন্ন হজ এজেন্সি অনিচ্ছাকৃত ভুল তথ্যগুলো শুধরে নিতে পারে। আর তা না হলে বিপুল সংখ্যক হজযাত্রী ভুল তথ্য দিয়ে অনলাইনে আবেদন করলেও কোনভাবেই ভিসা পাবেনা। তার জানা মতে- আবেদনপত্রে ভুল তথ্য ছিল এ ধরনের হজযাত্রীর সংখ্যা কত হবে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সংখ্যাটি অনেক বেশি বললেও নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা বলতে অস্বীকৃতি জানান।