আগামী ২০২১ সালে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন নিশ্চিত করার প্রত্যয় নিয়ে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের জন্য মোট ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বাজেট ঘাটতি এবারও ৫ শতাংশই ধরা হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার প্রস্তাব করা হয়েছে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। এর আগে দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের অনুমোদন নেওয়া হয়।
‘সমৃদ্ধ সোপানে বাংলাদেশ : উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথ রচনা’ শীর্ষক ১৩২ পৃষ্ঠার বাজেট-বক্তৃতা দশম জাতীয় সংসদে উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। এটা ছিল মুহিতের বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে টানা সপ্তম এবং তার নবম বাজেট উপস্থাপন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল সাড়ে ৩টায় সংসদ ভবনে প্রবেশ করেন। এরপর আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অর্থমন্ত্রীকে ২০১৫-২০১৬অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করার আহ্বান জানন। সাদা পায়জামা, ক্রিম কালারের পাঞ্জাবি এবং কালো মুজিবকোট পরিহিত অর্থমন্ত্রী দশম জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের সম্পূরক এবং ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থান শুরু করেন।
বক্তৃতার শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ এবং অন্যান্য আন্দোলন সম্মেলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিনি বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের অপরাজনীতির শিকার হয়ে যারা অকালে প্রাণ হারিয়েছেন কিংবা অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন তাদের প্রতি সমবেদনা জানান।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত স্পিকারের অনুমতি নিয়ে নিজ আসনে বসে পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে তার বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন।
অর্থমন্ত্রী ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের জন্য মোট ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে প্রস্তাব করেছেন। অনুন্নয়ন খাতে রাজস্ব ব্যয় ১ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা আর উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ৯৭ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর কর থেকে আয় হবে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। এনবিআর-বহির্ভূত কর থেকে আসবে ৫ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা এবং কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা।
বাজেটের অর্থায়নে বৈদেশিক উৎস থেকে আসবে ৩০ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৫৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা।