bangladesh-pakistanপ্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশকে ২৬৯ রানের টার্গেট ছুড়ে দিল পাকিস্তান। টস জিতে আগে ব্যাট করে পাকিস্তান ৯ উইকেটে ২৬৮ রান সংগ্রহ করে।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন মোহাম্মদ হাফিজ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন ফাওয়াদ অালম। বিসিবি একাদশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন শুভাগত হোম।

chardike-ad

বুধবার ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয় ম্যাচটি। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানকে সতর্ক সূচনা এনে দেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হাফিজ ও আজহার আলী। বাংলাদেশের দুই পেসার আল-আমিন ও মোহাম্মদ শহীদকে দেখেশুনে খেলেন ডানহাতি এই দুই ব্যাটসম্যান। ইনিংসের শুরুতে দুই প্রান্ত থেকে টানা ১২ ওভার করে যান আল-আমিন ও শহীদ।

১৩তম ওভারে বোলিংয়ে প্রথম পরিবর্তন আনেন নাসির হোসেনের পরিবর্তে অধিনায়কত্ব করা মুমিনুল হক। প্রেসবক্স প্রান্ত থেকে বোলিংয়ে আসেন মুক্তার আলী। নিজের প্রথম ওভারে ১০ রান খরচ করলেও দ্বিতীয় ওভারে ব্রেক থ্রু এনে দেন মুক্তার। দলীয় ৬৬ রানে আজহার আলী মুক্তারের বল কাট করতে গিয়ে লিটনের হাতে ক্যাচ দেন। ৪৯ বলে ২৭ রান করেন আজহার।

তবে দ্বিতীয় উইকেটে আবারও দলকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যান মোহাম্মদ হাফিজ ও হারিস সোহেল। ৬৪ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। তাদের ব্যাটে চড়ে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তান। কিন্তু শুভাগত হোমের ঘূর্ণিতে পাকিস্তানের স্বপ্ন ভেঙে যায়।

দলীয় ১৩০ রানে হারিস হোসেলকে প্রথমে সাজঘরে ফেরত পাঠান শুভাগত। অফস্পিনারের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে কভারে মুমিনুলের হাতে ক্যাচ দেন সোহেল (২৩)। ২৮তম ওভারে পাকিস্তান শিবিরে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেন শুভাগত। সেঞ্চুরির পথে থাকা হাফিজকে আউট করেন শুভাগত। মুক্তার আলীর হাতে ক্যাচ দেন হাফিজ। ৭৯ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৫ রান করেন প্রফেসর খ্যাত হাফিজ। নতুন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ানকেও টিকতে দেননি শুভাগত। কাট করতে গিয়ে শুভাগতের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হন রিজওয়ান।

শুভাগতের তিন উইকেটে পিছিয়ে পড়ে পাকিস্তান। এরপর দ্রুতই আরও তিন উইকেট তুলে নেয় বিসিবি একাদশ। দলীয় ১৬৮ রানে উইকেটরক্ষক সরফরাজ (৬), ১৭৩ রানে সাদ নাসিম (১), ১৮৫ রানে ওয়াহাব রিয়াজ (৭) আউট হন।

প্রস্তুতি ম্যাচ হওয়ায় ১৪ জনের স্কোয়াডের যেকোনো খেলোয়াড়কে মাঠে নামাতে পারেন টিম ম্যানেজম্যান্ট। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ব্যাটসম্যান আসাদ শফিককে ৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামায় পাকিস্তান। কিন্তু সফরকারী শিবিরকে হতাশ করেন ছোট্ট আসাদ শফিক। ৮ বলে ৫ রান করে সোহাগ গাজীর বলে বোল্ড হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

২০৩ রানে আসাদ শফিফকে হারানোর পর নবম উইকেটে ফাওয়াদ আলম ও ইয়াসির শাহ ২৫ রান যোগ করেন। এই জুটি ভাঙেন তাইজুল। ৯ রান করে এলবিডাব্লিউয়ের শিকার হন ইয়াসির।

একপ্রান্তে উইকেট হারাতে থাকলেও ফাওয়াদ আলম দলের রানের চাকা সচল রাখেন। নিজের স্বাভাবিক খেলা খেলে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ফাওয়াদ। তাইজুল ইসলামের করা ৪৯তম ওভারে প্রথম তিন বলে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন ফাওয়াদ। এরপর শেষ বলে আরো একটি বাউন্ডারি হাঁকান বাহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৫৮ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৬৭ রান করেন ফাওয়াদ। তার সঙ্গে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন সাঈদ আজমল।

এই ম্যাচে বিসিবি একাদশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মুমিনুল হক। যদিও আজ দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল নাসির হোসেনের। শেষ মুহুর্তে বিসিবি একাদশের স্কোয়াডে তামিম ইকবাল আসায় নাসিরকে বিশ্রাম দিয়েছে টিম ম্যানেজম্যান্ট।

বিসিবি একাদশ স্কোয়াড : মুমিনুল হক (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, রনি তালুকদার, লিটন কুমার দাস, তামিম ইকবাল, শুভাগত হোম চৌধুরী, সোহাগ গাজী, আল-আমিন হোসেন, সাব্বির রহমান, জুবায়ের হোসেন, তাইজুল ইসলাম, আবুল হাসান, মুক্তার আলী ও মোহাম্মদ শহীদ।

পাকিস্তান স্কোয়াড : আজহার আলী (অধিনায়ক), মোহাম্মদ হাফিজ, সরফরাজ আহমেদ, সামি আসলাম, ‍সাদ নাসিম, আসাদ শফিক, ফাওয়াদ আলম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, হারিস সোহেল, সাঈদ আজমল, ইয়াসির শাহ, ওয়াহাব রিয়াজ, এহসান আদিল ও রাহাত আলী।

গত সোমবার ঢাকায় এসে মঙ্গলবার অনুশীলন করে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলতে বাংলাদেশ সফরে এসেছে দলটি। ১৭ এপ্রিল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম ওয়ানডে। খুলনার শেখ অাবু নাসের স্টেডিয়ামে একটি টেষ্ট ছাড়া বাকি ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে মিরপুরে।