মালদ্বীপে বাংলাদেশিদের ওপর সাম্প্রতিক কিছু হামলার ঘটনার পর সেখানে কর্মরত বাংলাদেশিদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। গত সপ্তাহে সেখানে একজন বাংলাদেশি ছুরিকাঘাতে নিহত এবং আরও তিনজন ছুরিকাহত হয়েছেন।
এসব ঘটনায় বাংলাদেশিরা এখন উদ্বেগের মধ্যে আছেন এবং অনেকে তাদের কর্মস্থলে যেতেও ভয় পাচ্ছেন।
মালদ্বীপের বাংলাদেশিরা এসব হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আগামীকাল মালেতে এক মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। কিন্তু মালদ্বীপের কর্তৃপক্ষ তাদেরকে এ ধরণের কর্মসূচি পালনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। অন্যদিকে মালেতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়ার এডমিরাল কাজী সারোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, তিনিও বাংলাদেশিদের প্রতি এ ধরণের কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্যে মালদ্বীপে আশি থেকে নব্বুই হাজারের মতো বাংলাদেশি আছেন বলে ধারণা করা হয়। এদের বেশিরভাগই নির্মাণ এবং পর্যটন শিল্পে কাজ করেন।
মালেতে গাড়ীচালক হিসেবে কর্মরত বাংলাদেশি ফয়সল আহমেদ বলেন, গত দশ বছর ধরে তিনি মালদ্বীপে আছেন। কিন্তু এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনো হননি।
তিনি জানান, বাংলাদেশিদের ওপর হামলার ঘটনা বাড়ছে। এতে করে তারা আতংকের মধ্যে আছেন। বিশেষ করে সম্প্রতি মালেতে একটি রেস্টুরেন্টে ক্যাশিয়ার হিসেবে কর্মরত এক বাংলাদেশিকে পেছন থেকে মোটর সাইকেলে এসে ছুরি চালিয়ে যেভাবে হত্যা করা হয়, তাতে সবাই ভয় পেয়ে গেছেন।
বাংলাদেশিরা কেন হামলার শিকার হচ্ছেন সে প্রশ্নের উত্তরে ফয়সল আহমেদ বলেন, এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। মালদ্বীপে রাজনৈতিক সমস্যা চলছে। তার সঙ্গে এটার সম্পর্ক থাকতে পারে।
মালদ্বীপে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়ার এডমিরাল কাজী সারোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশিদের নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে তিনি গতকাল মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন এবং এ নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশিদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত সারোয়ার হোসেন জানান, মালদ্বীপের আভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণেই বাংলাদেশিরা এরকম হামলার শিকার হচ্ছেন বলে তারা ধারণা করছেন।
তিনি বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট নাশিদকে তের বছরের সাজা দেয়ার পর মালদ্বীপে রাজনৈতিক সংকট দানা বাঁধছে। মালদ্বীপের বিরোধী দল বিদেশীদের ওপর আঘাত করে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশীরা নন, ভারতীয়রাও এরকম হামলার শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি এক ভারতীয় এমন এক হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন।