‘ভাইরে, চোখ থাকতেও অন্ধ অইলাম। আমাগো কী দোষ? আমরা রাজনীতি করি না। কোনো দলের মিছিলে-মিটিংয়েও যাই না। আমাগো শরীরে কেন পেট্রোল মারা হয়?’ বার্ন ইউনিটের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতর ৪৮ বছর বয়সী শরীফ খান এভাবেই তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। যাত্রাবাড়ীতে গাড়িতে দেওয়া আগুনে পুড়েছে শরীফের মুখমণ্ডলসহ শরীরের ২০ শতাংশ, পুড়েছে তার স্বপ্নও। পোড়া ক্ষতের জন্য তিনি এখন চোখে খুলতে পারছেন না।
নিউমার্কেটে একটি শাড়ির দোকানে কাজ করেন শরীফ। দুই ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে টানাপড়েনের সংসার থাকলেও সেখানে সুখের কোনো কমতি ছিল না। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন তিনি। প্রতিদিনের মতো গতকালও দোকানে কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন। শরীফের শ্যালক লুৎফুর রহমান মোল্লা সমকালকে বলেন, তার বোনজামাইয়ের ব্যবহার অত্যন্ত অমায়িক। জীবনে কারও সঙ্গে রাগতস্বরে কথা বলেননি। নিজের সাধ্য না থাকলেও অন্যের উপকার করার চেষ্টা করতেন সব সময়। অন্যের বিপদে এগিয়ে যেতেন।
শরীফের এমন করুণ পরিণতি এখনও পুরোপুরি জানানো হয়নি তার স্ত্রী মাছুমা আক্তারকে। এরই মধ্যে দু’বার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন মাছুমা। স্বামীর দগ্ধ হওয়ার কথা পুরোপুরি জানলে ফের অসুস্থ হতে পারেন_ এমন আশঙ্কায় আপাতত মাছুমাকে দুঃসংবাদ জানানো হয়নি। সমকাল।