বিশ্বকাপ দল নিয়ে বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে; বিশেষ করে চূড়ান্ত দল ঘোষণার পরই বিতর্কটা আরও বেড়েছে। প্রধান নির্বাচকের পরিবর্তে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন নিজেই দল ঘোষণা করেন। নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর দল ঘোষণা করা হয়। এ কারণে জোরালো গুঞ্জন ওঠে, শেষ সময়ে এসেও দলে কাটাছেঁড়া করা হয়েছে।
জোবায়ের হোসেনকে কেন দলে রাখা হলো না- এ প্রশ্ন আগেই উঠেছিল। দলে সাকিব আল হাসানসহ তিন বাঁ-হাতি স্পিনার রাখা হয়েছে। তবে একমাত্র লেগ-স্পিনার জোবায়ের দলে নেই কেন, সেটার সদুত্তর মিলছে না। সাবেক অধিনায়ক থেকে শুরু করে কোচ হাথুরুসিংয়ে নিজেও জোবায়েরকে বিশ্বকাপ দলে রাখার পক্ষে ছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে, পেসার আল আমিন হোসেনকে নিয়েও। কেউ কেউ মনে করছেন, বোলিংয়ে আগের সে ধার হারিয়েছেন তিনি। অপর পেসার রুবেল হোসেনের বিপক্ষে অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির মামলা রয়েছে। তিনি যে খেলায় এখন পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে পারছেন না, সেটা অস্পষ্ট ছিল না। বৃহস্পতিবার এ পেসারকে জেলে পাঠানোর পর তার পরিবর্তে বিকল্প কাউকে ভাবতে শুরু করেছে বিসিবি। দ্রুত জেল থেকে ছাড়া না পেলে রুবেলের বিশ্বকাপ অনিশ্চিত।
সোমবার থেকে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন ক্যাম্প শুরু হবে। এদিকে চোটের কারণে ক্যাম্পে থাকতে পারছেন না তামিম ইকবাল। হাতের ইনজুরিতে রয়েছেন টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও। এখনই দলের সঙ্গে ক্যাম্পে যোগ দিতে পারছেন না তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক অধিনায়ক বলেন, ‘বিসিবির এতগুলো বিতর্ক একসঙ্গে রাখা কোনো মতেই ঠিক হয়নি। এক-দুজনকে নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু দলের অনেক বিষয়েই এখন বিতর্ক তৈরি হচ্ছে।’ রুবেল হোসেন জেল থেকে ছাড়া পেলে এবং বিশ্বকাপে খেলতে পারলেও মানসিকভাবে এ ধাক্কা কতটা সামলে নিতে পারবেন- সেটিও ভাবনার বিষয়। জেলে যাওয়ার এ ধাক্কা তার মাঠের পারফরম্যান্সেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন ওই অধিনায়ক।
এদিকে দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিসিবির সাবেক প্রধান সাবের হোসেন চৌধুরীও। বিশেষ করে অভিজ্ঞদের পরিবর্তে নতুনদের বেশি করে সুযোগ দেয়া ঠিক হয়নি বলেই মনে করেন তিনি। গতকাল একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাবের হোসেন জানান, বিশ্বকাপ দলের ৯ থেকে ১০ জন ছিলেন অটোমেটিক চয়েস। পরের দিকে নতুন প্লেয়ারদের সুযেগা দেয়া উচিত। কিন্তু বিশ্বকাপে এতগুলো অনভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে একসঙ্গে নেয়া ঠিক হয়নি। যদিও পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বকাপ দল নির্বাচন করা হয়েছে বলে মনে করছেন নির্বাচকরা। কিন্তু জিম্বাবুয়ে দলের বিপক্ষে পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করেই দল নির্বাচন করেছেন তারা। তবে জিম্বাবুয়ে দলের মান এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো টাফ কন্ডিশনে খেলার বিষয়টি তাদের মাথায় রেখে অভিজ্ঞদের বেশি করে সুযোগ দেয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি। স্পিনার আবদুর রাজ্জাককে দলে দেখতে চেয়েছিলেন সাবের চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সে অভিজ্ঞ একজন খেলোয়াড়। অস্ট্রেলিয়ায় খেলার অভিজ্ঞতা; আর বিগ ম্যাচ খেলার টেম্পারমেন্টও রয়েছে তার। যেটা খেলার মাধ্যমেই আসে।’ তবে বিশ্বকাপ দলের জন্য শুভ কামনা রেখে তিনি জানান, ‘দল নির্বাচন নিয়ে আপত্তি আছে। সে আপত্তি জানানোর সময় এখন নয়। বিশ্বকাপের পর এ নিয়ে কথা বলা যাবে। আমরা দলের পারফরম্যান্স দেখতে চাই। বিশ্বকাপ দল যেমনই হোক, তাদের নিয়ে পুরো বাংলাদেশ এখন এক। আলোকিত বাংলাদেশ।