আজ ২৩ ডিসেম্বর এমন একজন মানুষের জন্মদিন যাকে বাংলাদেশের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর জনকও বলা যায়! কিশোর উপন্যাসেও তার কাছাকাছি আর কেউ নেই। শিশু-কিশোর তো বটেই, সব প্রজন্মের পাঠকের কাছে সমান ভাবে জনপ্রিয় তিনি। মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৯৫২ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ, মা আয়েশা ফয়েজ। জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকে হুমায়ুন আহমেদের মেজো ভাই তিনি।
১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান এবং সেখান থেকে ১৯৮২ সালে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর ১৯৮৮ সালে বিখ্যাত বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চ (বেলকোর)-এ গবেষক হিসাবে যোগ দেন। ১৯৯৪ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং সিলেটের শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। কর্মজীবনের সাথে সাথে গণিত অলিম্পিয়াড সহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সম্পর্কযুক্ত রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী ইয়াসমিন হকের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ড. ইয়াসমিন হক শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। তাদের দুই সন্তান। ছেলে নাবিল ইকবাল যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি করছেন এবং কন্যা ইয়েশিম ইকবাল হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞানে পিএইচডি করছেন।
মাত্র ৭ বছর বয়সে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লিখে হাতে খড়ি হয় সাহিত্য চর্চার। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে শুরু করেন সাহিত্য চর্চার। প্রকাশিত প্রথম লেখা `কপোট্রনিক ভালবাসা`।
সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার অবাধে চলাচল রয়েছে। তার অসংখ্য বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বই হলো- আকাশ বাড়িয়ে দাও, বিবর্ণ তুষার, দুঃস্বপ্নের দ্বিতীয় প্রহর, কাচসমুদ্র, সবুজ ভেলভেট, ক্যাম্প, মহব্বত আলীর একদিন, একজন দুর্বল মানুষ, ক্যাম্প, ছেলেমানুষী ,নুরূল ও তার নোটবই, কপোট্রনিক সুখ দুঃখ, ক্রুগো, বিজ্ঞানী সফদর আলীর মহা মহা আবিস্কার, টুকুনজিল, নি:সঙ্গ গ্রহচারী, অক্টোপাসের চোখ, ইকারাস, প্রডিজি, কেপলার টুটুবি, ব্ল্যাক হোলের বাচ্চা, হাতকাটা রবিন, দীপু নাম্বার টু, আমার বন্ধু রাশেদ, বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর, কাজলের দিনরাত্রি, আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা, তিন্নি ও বন্যা, বুগাবুগা, গনিত এবং আরও গণিত, একটু খানি বিজ্ঞান, গণিতের মজা মজার গণিত, কোয়ান্টাম মেকানিক্স, আরো একটু খানি বিজ্ঞান।
সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন।