Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

britainব্রিটেনে বৈধভাবে প্রবেশ এবং বসবাসকারীদের জন্য যুগান্তকারী এক রায় প্রদান করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন কোর্ট। যেখানে ব্রিটিশ সরকার ক্রমাগতভাবেই ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা কড়াকড়ি করতে বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।

বৃহস্পতিবার ডেইলি টেলিগ্রাফ, ডেইলি গার্ডিয়ান এবং স্কাই নিউজ সূত্রে এই সংবাদ নিশ্চিত হওয়া গেছে।  একইসঙ্গে লুক্সেমবার্গের ইউরোপীয়ান কোর্টের রেজিস্ট্রার সূত্রে এ রায় নিশ্চিত করা হয়েছে।

chardike-ad

রায়ে বলা হয়েছে, ইউরোপের যেকোন দেশে লিগ্যালভাবে বসবাসকারী কিংবা ইউরোপের রেসিডেন্ট কার্ডধারীরা এ সুযোগ পাবেন। এছাড়া কার্ডধারীর সঙ্গে যদি তার পোষ্য স্ত্রী, স্বামী, ছেলে, মেয়ে পরিবারদের ইউরোপে নিয়ে এসে সেখান থেকে রেসিডেন্ট কার্ড নিয়ে সরাসরি ব্রিটেনে বসবাসের জন্য আসতে পারবেন। তবে এতে কোন প্রকারের ভিসার দরকার হবেনা।

জানা যায়, সিয়ান ম্যাককার্থি নামের আইরিশ এবং ইউকের দ্বৈত নাগরিক হয়ে স্পেনে বসবাস করেন। তার স্ত্রী হেলেনা কলম্বিয়ার নাগরিক কিন্তু তিনি স্পেনে তার সঙ্গে থাকলেও ম্যাককার্থির সঙ্গে ব্রিটেনে এসে বসবাস করতে হলে প্রতিবারই তাকে ছয় মাসের টেম্পোরারি ভিসা নিয়ে আসতে হয়। তাই তিনি এর বিরুদ্ধে হোম অফিস থেকে সমাধান না পেয়ে ইংল্যান্ডের হাইকোর্টের নিকট দ্বারস্থ হন। পরে হাইকোর্ট সেই কেস ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে রেফার করেন।

ইউরোপিয়ান কোর্ট ম্যাককার্থির কেসের রায়ে বলেন, হেলেনা ইউকে বসবাস করার জন্য ভিসার দরকার নেই। ইউরোপীয়ান কোর্টের এই রায় একজন ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের বাইরের নাগরিকদের যে কোন সূত্রে ইউরোপের  কোন দেশের রেসিডেন্ট পারমিট নিয়ে  সহজেই ব্রিটেনে প্রবেশ ও বসবাসের সুযোগ করে দিলো। ইউরোপে এটাকে আইনগতভাবে ফ্রিডম অব মুভম্যান্ট বলা হয়।

এদিকে এশিয়াসহ অন্যান্য দেশ থেকে অর্থ্যাৎ ইউরোপের যেকোন দেশ যেমন- ফ্রান্স, ইটালি, গ্রিস, নেদারল্যান্ডস ইত্যাদি দেশে এসে আইনি প্রক্রিয়ায় রেসিডেন্ট পারমিট কার্ড গ্রহণ করেছেন তারাও এই রায়ের ফলে তাদের পরিবার নিয়ে ইউরোপের সংশ্লিষ্ট দেশে এসে ব্রিটেনে থাকার বা প্রবেশের অধিকার পাবেন। তাকে বা তাদের জন্য আর নতুন করে ব্রিটেনের ভিসার দরকার হবেনা।

তবে এই রায়ের ফলে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বেশি উপকৃত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে যারা ব্রিটিশ হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের স্ত্রী বা স্বামী বা পরিবার ব্রিটেনে নিয়ে যেতে নানা জটিলতা ও আপিলের সুযোগে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন শুধুমাত্র তাদের জন্য কিংবা তারা এখন থেকে সহজেই ইউরোপে গিয়ে সেখানে পরিবার নিয়ে ইউরোপের রেসিডেন্ট পারমিট নিয়ে ব্রিটেনে তাদের পরিবার নেয়া সহজ হয়ে যাবে। যেহেতু তারা অলরেডি ব্রিটিশ। এরকম কথাই বললেন পূর্ব লন্ডনের একজন ইমিগ্র্যাশন সলিসিটর।

আবার ইউরোপের এমন অনেক দেশ আছে যেখানে ইমিগ্র্যাশন ব্যবস্থা শিথিল এবং সহজেই ভিসা পাওয়া যায়। বিশেষ করে পর্তুগাল, গ্রিস, স্পেনসহ ইত্যাদি দেশ। সেই সব দেশে স্থায়ী বাসস্থানের পারমিশন সংগ্রহ করা যায় সহজেই। একবার সেইসব দেশের রেসিডেন্ট পারমিট সংগ্রহ করা গেলে অনায়াসে ব্রিটেনে স্থায়ী হওয়ার পথ সুগম হয়ে যাবে।

তবে ব্রিটেন অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোর্টের এই রায়ের ব্যাপারে বলছে চূড়ান্ত ডাইরেকশন ব্রিটেনের হাইকোর্ট  থেকে আসবে।

বর্তমান কোয়ালিশন সরকার নেট ইমিগ্র্যাশন  কমিয়ে আনার লক্ষ্যে নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোর্টের এই রায়ের ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও রয়েছে ব্রিটেনে।

কনজারভেটিভ পার্টির এমইপি টিমোতি কির্কহোপ বলেছেন, আমরা চাই ইউকে ভিসা সিস্টেম কন্ট্রোল করা হবে ইউকের দ্বারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন দ্বারা নয়।

তিনি আরো বলেন, ইউকের ইমিগ্র্যাশন সিস্টেম ফেয়ার এবং এর অপব্যবহার কোনভাবেই কাম্য নয়।

এদিকে আগামী বছরের মে মাসের সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইমিগ্র্যাশন ইস্যু আরো সামনে চলে আসবে।

ইতিমধ্যেই কনজারভেটিভ সরকার এই ইস্যুতে ব্রিটেনের ভিতরে নানামুখী সমালোচনা ও চাপের মধ্যে রয়েছে। ইমিগ্র্যাশন সিস্টেম আরো কড়াকড়ি হবে এতে কোনো সন্দেহ নাই। তবে ব্রিটেন বলছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফ্রিডম অব মুভম্যান্ট এর সুযোগে ননইউরোপীয় ও ইউনিয়ন ভুক্ত নাগরিকেরা যথেচ্ছভাবে ব্রিটেনে ঢুকে পড়ছে এবং পড়বে। তবে বর্তমান সরকার বলছে যা কোনভাবে হতে দেয়া হবেনা। এতে আরো কড়াকড়ি আরোপের পক্ষে এবং হোম অফিস বলছে সব কিছুই রিভিউ হবে ইমিগ্র্যাশন এক্সপার্টদের দ্বারা। শীর্ষনিউজ।