নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেই বল হাতে ম্যাজিক দেখালেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। প্রথম জিম্বাবুয়ের পতন হওয়া ১০ উইকেটের ছয়টির শিকারিই তিনি। তার ঘূর্ণির সামনে দিশেহারা জিম্বাবুয়ে দলের প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছে মাত্র ২৪০ রানে। জিম্বাবুয়ের ইনিংসে কেবল সিকান্দার রাজাই হাফসেঞ্চুরি করতে সমর্থ হন। বোলিংয়ে দলের সিংহভাগ দায়িত্ব একাই তুলে নেয়ার পরও পুরো কৃতিত্ব সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিলেন সাকিব। দুর্দান্তভাবে ফিরে আসার জন্য ভাগ্যকেই সবার উপরে স্থান দিলেন এ বাঁহাতি স্পিনার। প্রথম টেস্টে প্রথম দিনের খেলা শেষে বললেন, ‘আমি খুবই ভাগ্যবান। আমাদের দলের বোলাররা সবাই ভালো বোলিং করেছেন। আমি হয়তো উইকেট একটু বেশি পেয়েছি।’
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলে ছিলেন না সাকিব। দলে তার থাকা আর না থাকার পার্থক্যটা যে কতখানি, সেটা গতকাল মাঠে নেমেই প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি। দলে না থাকাটা বাড়তি প্রণোদনা হিসেবে কাজ করেছে কি না— এমন প্রশ্নকে আমলই দেননি সাকিব। বরং দর্শক, পরিবার, সতীর্থ— সবার কাছ থেকে যে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন তাকেই বড় করে দেখছেন। সাকিবের ভাষায়, ‘সবার এত সমর্থন পেয়েছি যে নেতিবাচক সবকিছুই মাথা থেকে চলে গেছে। পরিবার, দর্শক সবাই আমার পাশে ছিল। চেনা-অচেনা এত মানুষের সমর্থন ভাবাই যায় না।’
প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে বলেও মনে করছেন সাকিব। উইকেটে বাউন্স থাকায় বোলাররা কিছুটা সুবিধা হচ্ছে তার পরও বাংলাদেশ বড় লিড পাবে বলেই বিশ্বাস এ তারকার। সাকিব বলেন, ‘উইকেটে বাউন্স আছে। বোলাররা সহায়তাও পাচ্ছে। তার পরও আমি মনে করি, এ উইকেটে আমাদের ব্যাটসম্যানদের বড় স্কোর গড়ার সামর্থ্য আছে। ৩৫০-৪০০ রান করতে পারলেই এ টেস্টে খুবই ভালো জায়গায় থাকব আমরা। তবে এর চেয়েও বেশি রান করার সামর্থ্য আছে আমাদের।’
জিম্বাবুয়েকে ২৪০ রানে অলআউট করার পর প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে ১ উইকেটে ২৭ রান। এ প্রসঙ্গ ধরে বলেছেন, ‘ওদের পেসাররা যথেষ্ট ভালো বোলিং করেছে। তবে আমাদের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান খুব ভালোভাবেই খেলেছে তাদের।’ উইকেটে বাউন্স থাকার সুবিধা কাজে লাগিয়েছেন বলে স্বীকারও করে নিয়েছেন। তবে জিম্বাবুয়ে স্পিনারদের সামলাতে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন তিনি। তার কথায়, ‘আমাদের ব্যাটসম্যানরা ওদের চেয়ে স্পিন ভালো খেলে।’
এ নিয়ে ক্যারিয়ারে ১২তমবারের মতো টেস্ট ইনিংসে পাঁচ বা তার চেয়ে বেশি উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখান সাকিব। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই প্রথম পাঁচ উইকেট শিকার করলেন। টেস্ট খেলা দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ছাড়া সবার বিপক্ষেই এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখালেন তিনি। বলা বাহুল্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এখনো টেস্ট খেলেননি সাকিব। এ প্রসঙ্গে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় জানালেন, ‘যদি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পাঁচ উইকেট পাই, তাহলে তো ভালোই হয়।’ বণিকবার্তা।