দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম যে প্রথাগত যুদ্ধটি হয়েছিল, সেটি ছিল ইরাক-ইরান যুদ্ধ। প্রথম পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত এ যুদ্ধে ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে সমর্থন দিয়েছিল সৌদি আরব।
সম্প্রতি মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিআইএর প্রকাশ করা এক গোপন নথি থেকে জানা যায়, ১৯৮৭ সালে সমুদ্রে সৌদি আরবের তেল ক্ষেত্রগুলোতে হামলার পরিকল্পনা করেছিল ইরান। তবে মার্কিন স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া দৃশ্যাবলি দেখে হামলার ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। এতে ভন্ডুল হয়ে যায় ইরানের পরিকল্পনা।
নিউইয়র্কভিত্তিক অনলাইন পত্রিকা বিজনেস ইনসাইডারে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এসব তথ্য উঠে আসে।
‘উই ওয়াচড দ্য গালফ’ শিরোনামে সিআইএর পক্ষ থেকে প্রকাশিত গোপন নথিতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে কীভাবে উপসাগরীয় এলাকার সংঘাতময় মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র তার নজরদারির প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে।
আশির দশকের শেষের দিকে ইরাক-ইরান যুদ্ধ যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর অগ্রাধিকার অন্বেষণ দলকে নির্দেশ দেওয়া হয়— পুরো দৃষ্টি দিয়ে পারস্য উপসাগরের দিকে নজর রাখতে। দলটির কাজ ছিল মূলত মহাশূন্য থেকে ধারণকৃত দৃশ্যাবলি বিশ্লেষণ করা।
ওই বছরের শুরুর দিকে ওই দলটি জানতে পারে, পারস্য উপসাগরের উত্তরাঞ্চলে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও রকেট লঞ্চার সজ্জিত একটি ছোট নৌতরি তৈরি করছে ইরানের রিভুলিউশনারি গার্ড। এসব তথ্য জানার মাধ্যমে সৌদি আরব ইরানের হামলা ঠেকিয়েছে। এ ছাড়া ১৯৮৭ সালে ক্ষিপ্রগতিসম্পন্ন ৬০টি যুদ্ধজাহাজ ফিরিয়ে দেয় সৌদির রয়্যাল নেভি।
১৯৮৭ সালের অক্টোবর মাসে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র নজরদারি বাড়ায়। এর ফলে সৌদি আরবের বেশ কয়েকটি তেল উৎপাদনকারী পরিকাঠামো ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়। ওই সময় সৌদি আরবের তেল ক্ষেত্র যদি সত্যিই হামলার শিকার হতো, তবে কেবল সে দেশটিকেই নয় বরং পুরো বিশ্বের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে তীব্র নেতিবাচক প্রভাব পড়ত।
কেননা, এ সময় বিশ্বের তেল বাজার পুরোপুরি উপসাগরীয় দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল ছিল।
নিবন্ধে আরো বলা হয়, সিআইএর প্রকাশিত এ গোপন নথি ইঙ্গিত করে যে যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইট নজরদারির কারণে সৌদি আরব বেশ কিছু আক্রমণ ঠেকাতে পেরেছে।