উপমহাদেশে রাজনীতিবিদ তকমাটা মনের পর্দায় যে চেহারা ভাসিয়ে তোলে সেটা সাধারণত খুব পূজনীয় কোন চরিত্র হয় না। স্বভাবতই এমন মানুষেরা যখন গণমাধ্যমের শিরোনাম হন তখন তা ‘নেতিবাচক’ কিছু ধরে নিয়েই পাঠক পড়া শুরু করেন! তবে ‘নেতা’রাও যে ভালো খবরের শিরোনাম হতে পারেন সেটাই প্রমাণ করে দেখালেন ভারতের এক সরকারদলীয় সাংসদ।
ভূমিকাটা প্রয়োজন ছিল। কারন ছেলের মৃত্যুর পর পুত্রবধূকে বিয়ে করানোর গল্প শুধু উপমহাদেশ কেন, গোটা পৃথিবীতেই খুঁজতে গেলে নাটক-সিনেমার স্ক্রিপ্টে ছাড়া আর কোথাও পাওয়ার সম্ভাবনা বিরল। তবে এমন বিরল ভালো কাজটিই সংবাদের শিরোনাম করেছে গুজরাটের পোরবন্দরের বিজেপি সাংসদ রাদাদিয়া ভিথাল হংসরাজকে।
খবরে প্রকাশ, সাংসদের ছেলে কল্পেশ মাস সাতেক আগে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। রেখে যান দুই পুত্রসন্তানসহ স্ত্রী মনীষাকে। পুত্রবিয়োগের শোক কাটিয়ে উঠেই ভিথাল মনীষার ভবিষ্যৎ চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়েন। প্রায়ই কর্মীসমর্থকদের সাথে আলাপকালে এ প্রসঙ্গ তুলতেন। তবে বিষয়টা শেষপর্যন্ত মুখের কথা আর মনের ইচ্ছাতেই সীমাবদ্ধ রাখেন নি তিনি। দ্রুতই বিয়ে ঠিক করে ফেলেন তাঁরই আরেক ছেলের বন্ধুর সাথে।
শুধু এটুকু খবর হলেও তো সেটা ইতিহাস হয়ে যায়! রাদাদিয়া হংসরাজ ইতিহাসের ধার ধারেন কিনা সেটা হয়তো আপাতত জানা সম্ভব নয়, কিন্তু এটুকু বলা যায় খবরের পরের অংশটুকু ইতিহাস ছাড়িয়ে রীতিমতো রূপকথায় ঠাই পাবার মতো! সাবেক পুত্রবধুর ভবিষ্যৎ জীবনে যেন কখনও অর্থের সংকট হানা না দেয় সেজন্যে বিয়েতে উপহার হিসেবে দিয়ে দিলেন একশ কোটি রুপির স্থাবর সম্পত্তি!
এই শুক্রবার বেশ আড়ম্বর আয়োজনে ধুমধাম করেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হল। কন্যাদানের কাজটাও ‘পিতা’র আসনে বসে তিনিই সারলেন।
অমন ষোলআনা ভালো একটি খবর পড়ে স্বস্তির দীর্ঘশ্বাস ফেলার আগে জেনে রাখুন, দিনটা বাংলায় বিধবা বিবাহ প্রচলের প্রধান পথিকৃৎ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন!