Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

“আমাদের সময় চায়ের দোকান, সিনেমা হল আর পার্কই ছিল প্রেম করার উৎকৃষ্ট জায়গা। টাকাপয়সা তখন কোন ব্যাপার ছিল না। একজন কিশোর বা তরুণের হাতে পয়সা কোত্থেকেই বা থাকবে? একটা লাঞ্চবক্স নিয়ে পার্কে বসে চুটিয়ে প্রেম করা যেত। জীবন তখন অনেক বেশী সহজ ছিল”, ৫৭ বছরের গৃহবধু লি উওন হি স্মৃতিচারণ করছিলেন তাঁর কুড়ি বছর বয়সের।

কয়েক দশক আগের এসব গল্প এ যুগের কোরিয়ান প্রজন্মের কাছে হয়তো রূপকথাই মনে হবে। টাকা ছাড়া যে আজকাল ডেটিং দূরে থাক, প্রেম করতে চাওয়াটাই রীতিমতো অপরাধের পর্যায়ে পরে! সঙ্গী বা সঙ্গিনীর আর্থিক অবস্থা হালের কোরিয়ান তরুণ-তরুণীরা কতোটা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেন সেটা জানতেই সম্প্রতি একটি জরিপের উদ্যোগ নিয়েছিল কোরিয়া ইন্সটিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ারস (কেআইএইচএসএ)।

chardike-ad

korean_love১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ১৫শ’ কোরিয়ানের উপর চালানো জরিপের ফল বলছে, এ কালের কোরিয়ান প্রেমিক-প্রেমিকারা কিছু সুনির্দিষ্ট ‘যোগ্যতা’র অধিকারীঃ তাদের বয়স ২৫ থেকে ২৯-এর মধ্যে, তাঁদের পড়াশুনা শেষ, তাঁদের গড় বার্ষিক আয় আড়াই থেকে সাড়ে তিন কোটি উওন।

সমীক্ষার ফলাফল আরও বলছে, একজন কোরিয়ান তরুণ বা তরুণী কেবলমাত্র তখনই নিজেকে কোন সম্পর্কে জড়ানোর জন্য উপযুক্ত মনে করছে যখন সমাজের চোখে সে ‘সক্ষম’ হচ্ছে; অর্থাৎ তাঁর একটা ভালো চাকরি আছে বা অনেক টাকাপয়সা আছে, তাঁর বাবা-মা অন্যদের কাছে তাঁর পরিচয় দিতে গর্ববোধ করছে ইত্যাদি।

পরিস্থিতি এতোটাই গুরুতর হয়ে পড়ছে যে বিপরীত লিঙ্গের কারও সাথে প্রথম সাক্ষাতের আগেও তাঁর আয়রোজগারের ব্যাপারে খোঁজখবর করা হচ্ছে। আর একবার প্রেম হয়ে গেলেই যে সেটা জনম জনমের গাঁটছড়া হয়ে যায় তাও নয়! বরং যতদিন টাকা আছে ততদিনই প্রেম আছে! টাকা শেষ তো প্রেমও পালাবে!

একটু অংকের হিসেবনিকেশে নজর দেয়া যাক। বছরে আড়াই থেকে সাড়ে তিন কোটি উওন আয় করেন এমন পুরুষদের ৪৩.২ শতাংশ ও নারীদের ৫২.৮ শতাংশ জানিয়েছেন তাঁরা বেশ চুটিয়েই প্রেম করছেন। আর বার্ষিক দেড় কোটি উওনের নীচে আয় করেন এমন ২৭.৩ শতাংশ পুরুষ ও ২৮.১ শতাংশ নারী বলেছেন তাঁরা ‘একসময়’ প্রেম করতেন।

নিয়মিত আয় করছেন এমন পুরুষদের ৭০ শতাংশ প্রেমিকার প্রয়োজন অনুভব করেন বলে জানান। বিপরীতে বেকারদের অর্ধেকই কোন রোমান্টিক সম্পর্কের ব্যাপারে আগ্রহী নন।

গবেষকরা বলছেন ‘পর্যাপ্ত’ পরিমাণ অর্থের মালিক না হওয়া পর্যন্ত কোনপ্রকার প্রেমভালোবাসায় না জড়ানোর এমন মানসিকতা প্রভাব ফেলছে জাতীয় জন্মহারে। প্রসঙ্গত কোরিয়ায় বর্তমান জন্মহার নারীপিছু ১.১ যা সমগ্র বিশ্বে সবচেয়ে কম।