এ মুহূর্তে বৈশ্বিক অর্থনীতি এক ক্রান্তিকাল পার করলেও বিশ্বে ধনকুবেরের সংখ্যা অতীতের যে কোনো সময় অপেক্ষা বেশি। এক জরিপে দেখা গেছে, এ বছর ১৫৫ জন নতুন বিলিয়নেয়ার আত্মপ্রকাশ করেছেন। ফলে মোট বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা ২ হাজার ৩২৫ জনে উন্নীত হয়ে এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে। ২০১৩ সালের তুলনায় এ বছর ৭ শতাংশ হারে বিলিয়নেয়ারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। খবর সিএনবিসি।
গত বুধবার ওয়েলথ এক্স এবং ইউবিএস ব্যাংক যৌথভাবে ২০১৪ সালের বিলিয়নেয়ার জরিপটি প্রকাশ করে। শুমারি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বিলিয়নেয়ারদের আবাসস্থল, যেখানে চলতি বছর নতুন ৫৭ জন যুক্ত হলেন। এশিয়া ও লাতিন আমেরিকা থেকে ৫২ এবং ক্যারিবীয় অঞ্চল থেকে ৪২ জন নতুন বিলিয়নেয়ার আত্মপ্রকাশ করেছেন।
দ্রুত বর্ধনশীল এ ধনীদের প্রায় সবাই উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদ এবং ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে নিজেদের এ অবস্থান তৈরি করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ৬৩ শতাংশ ধনীদের কোম্পানিগুলো ছিল প্রাথমিকভাবে ব্যক্তিমালিকাধীন। অস্থিতিশীল সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আফ্রিকায় ধনীদের মোট সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলেও তাদের সংখ্যা কমেছে। মধ্যপ্রাচ্যেও মোটামুটি একই চিত্র বিরাজমান।
তার পরও সম্মিলিতভাবে সারা পৃথিবীর মোট ধনীদের সম্পদ ১২ শতাংশ বেড়েছে, যার পরিমাণ ৭ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ পরিমাণ অর্থ ডাউ জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল গড়ভুক্ত সবগুলো কোম্পানির সম্মিলিত মূলধনের চেয়েও অনেক বেশি।
প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ধনীদের গড় বয়স ৬৩ বছর এবং গড় সম্পদ ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। লক্ষণীয়, যাদের কমপক্ষে ১ বিলিয়ন ডলার সম্পদ রয়েছে, তাদের প্রায় সবাই চল্লিশোর্ধ। প্রায় ৯০ শতাংশ পুরুষ বিলিয়নেয়ার বিবাহিত, ৬ শতাংশের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে, ৩ শতাংশ অবিবাহিত এবং ২ শতাংশ বিপত্নীক। পুরুষ ধনীদের প্রথম পাঁচজনই অর্থায়ন ও ব্যাংকিং, বিভিন্ন শিল্পের যৌথসেবা, আবাসন, নিত্যব্যবহার্য দ্রব্যাদি, পোশাক এবং বিলাসপণ্যের ব্যবসায়ে যুক্ত।
ধনী নারীদের ৬৫ শতাংশ বিবাহিত, ১০ শতাংশের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে, ৪ শতাংশ অবিবাহিত এবং ২১ শতাংশ স্বামীহারা। পুরুষদের মতো নারীরাও একই ধরনের ব্যবসা ও সেবা খাতে নিয়োজিত। পার্থক্য হলো, নারীরা বিভিন্ন অলাভজনক এবং জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অধিক মাত্রায় জড়িত।