Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান সাইবার হামলা রোধে ‘স্প্যামি পোস্ট’ নিয়ে কঠোর হচ্ছে শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক। চমকপ্রদ শিরোনাম দিয়ে শেয়ার করা পোস্টের অভাব নেই ফেসবুকে। বাস্তবিক অর্থে বিভ্রান্তিমূলক এ পোস্টগুলো মূল্যহীন ও ভুয়া। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ধরনের পোস্টের মাধ্যমেই ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার ছড়াচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। মূলত এ কারণে নিউজফিডে এ ধরনের ‘স্প্যামি পোস্টের’ উপস্থিতি কমাতে কঠোর হচ্ছে ফেসবুক। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

Facebook-troubleসংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্প্যামি পোস্টের মাধ্যমে ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়ার প্রবণতা বাড়ায় এ ধরনের পোস্ট ঠেকাতে আরো কঠোর হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ফেসবুকের বিবৃতি অনুযায়ী, ণড়ঁ রিষষ হবাবৎ নবষরবাব যিধঃ যধঢ়ঢ়বহবফ ড়হ ঃযব ত্বফ পধত্ঢ়বঃ ষধংঃ হরমযঃ !! ঈষরপশ ঐঊজঊ ঃড় ভরহফ ড়ঁঃ.- এ ধরনের শিরোনামের পোস্টগুলো প্রায়ই চোখে পড়ে ফেসবুকের টাইমলাইনে। শিরোনাম পড়ে অনেকেই কৌতূহলী হয়ে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করেন পোস্টের মূল লিংকে, কিন্তু বিস্তারিত পড়তে গিয়ে দেখা যায় আসলে কোনো তথ্যই নেই মূল লিংকটিতে। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ ধরনের চমকপ্রদ শিরোনামসর্বস্ব লিংকগুলোর মাধ্যমে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে থাকে সাইবার অপরাধীরা। এছাড়া কিছু কিছু পোস্ট প্রায়ই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় সাইটটির ব্যবহারকারীদের জন্য। অস্পষ্ট এবং ক্ষেত্রবিশেষে একেবারেই ভুয়া শিরোনামের কারণে বিভ্রান্তির শিকার হন তারা। টাইমলাইনে একের পর এক এ ধরনের ভুয়া শিরোনামসর্বস্ব পোস্টের কারণে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের লিংক দেখতে ব্যর্থ হন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা, যা সাইটটির মূলনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

chardike-ad

এ পোস্টগুলো নিয়ে ফেসবুকের বক্তব্য, ‘এ ধরনের পোস্টগুলোয় অনেক বেশি ক্লিক পড়ে। অর্থাৎ অনেক মানুষ পোস্টগুলো দেখেন, নিউজফিডের উপরেও চলে আসে পোস্টগুলো।’ কিন্তু ব্যবহারকারীরা নিউজফিডে কোন ধরনের পোস্ট দেখতে পছন্দ করেন, সেটি নিয়ে এক জরিপে ভিন্ন চিত্র পাওয়ার কথা জানায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির বিবৃতি অনুযায়ী, শিরোনাম দেখেই পুরো লেখাটি পড়বেন নাকি পড়বেন না সে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়, এমন পোস্টগুলোই পছন্দ করেন শতকরা ৮০ ভাগ ব্যবহারকারী। আর এ কারণে কোন পোস্টটি ব্যবহারকারীদের কাজে লাগবে আর কোনটি লাগবে না, সেটি নির্ধারণের জন্য বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করবে ফেসবুক। এছাড়া লিংক ফরম্যাটের ওপর ভিত্তি করে পোস্টগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলেও জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

প্রতিষ্ঠানটির বিবৃতি অনুযায়ী, বিশেষ নজরদারির মাধ্যমে শিরোনামসর্বস্ব এবং অপ্রাসঙ্গিক লিংকগুলোকে শনাক্ত করে তা সরিয়ে ফেলা হবে। অপ্রাসঙ্গিক লিংক শনাক্ত করার    জন্য যে লিংকগুলো অধিক লাইক বা শেয়ার    হয়ে থাকে, সেগুলোকে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করবে প্রতিষ্ঠানটি। কোনো লিংক শিরোনামসর্বস্ব বা অপ্রাসঙ্গিক পরিলক্ষিত হলে তা সরিয়ে    ফেলবে ফেসবুক। আর এতে করে সাইটটির ব্যবহারকারীদের তথ্য বেহাত হওয়ার আশঙ্কাও অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন সেবা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ও প্রাতিষ্ঠানিক তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি আলোচিত বিষয়। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর নানামুখী প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ব্যবহারকারীদের তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না কোনোভাবেই। এছাড়া সাইবার হামলা পরিচালনার জন্য হ্যাকাররা প্রতিনিয়তই তাদের গতিবিধি পরিবর্তন করছে। ফলে সাইবার হামলা সম্পর্কে আগাম কোনো ধারণাও করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এ প্রেক্ষাপটে ফেসবুকের পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বিশ্লেষকদের মতে, বিখ্যাত ব্যক্তি ও সেলিব্রিটিদের নামে বিভিন্ন লিংক ছড়িয়ে সম্প্রতি ফেসবুকে ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। মূলত এ কারণেই অধিক প্রদর্শিত লিংকগুলো পর্যালোচনার পদক্ষেপ নিয়েছে শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক। ক্রমবর্ধমান সাইবার হমলা ঠেকাতে ফেসবুকের এ পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বণিকবার্তা।