রবিবার কালো দিবস পালন করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। ২০০৭ সালের ২০-২৩ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী তথা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের উপর সংঘটিত অমানবিক, বেদনার্ত ও নিন্দনীয় ঘটনার স্মরণে এ দিবসটি পালিত হয়। প্রতিবছর ২৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কালো দিবস’ পালন করা হয়। সে হিসেবে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কালো দিবস। তবে আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ছুটি থাকার কারণে ক্লাস ও অফিসসমূহ বন্ধ থাকায় ২৪ আগস্ট রবিবার এবারের ‘কালো দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ উপলক্ষে আগামীকাল রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের কালো ব্যাজ ধারণ, সকাল ১১টা ৩০মিনিট থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসসমূহ স্থগিত রাখা এবং সকাল ১১টা ৩০মিনিটে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এসব কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীসহ সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র বা জিমনেসিয়াম দখল করে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ওই বছরের ২০ আগস্ট বিকেলে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ফুটবল খেলা দেখা নিয়ে সেনাসদস্যের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে সৈন্যরা ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয় এবং একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন। ওই ঘটনার রেশ ধরে ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিলে ক্যাম্পাস থেকে সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারের জোরালো দাবি ওঠে। তখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়ে জারি করা হয় সান্ধ্যআইন। পথে পথে ছাত্রদের ধরে পেটানো শুরু হয়। তবে এতে বিক্ষোভ আরও চাঙ্গা হয় এবং তা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।
আন্দোলনের মুখে ২১ আগস্ট জিমনেসিয়াম থেকে সেনা ক্যাম্প সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় সরকার। ২২ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন রিকশা চালক আনোয়ার। ওই দিন সন্ধ্যা থেকে সেনাসমর্থিত সরকার সান্ধ্য আইন জারি করে এবং দেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগীয় শহরের কলেজগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়।
২৩ অগাস্ট রাতে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ও অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদকে চোখ বেঁধে অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ঢাবির আরও ২ শিক্ষকসহ ৭ ছাত্র নেতা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষক ও ৫ জন ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে ছাত্র-শিক্ষকদের সম্মিলিত আন্দোলনে বাধ্য হয়ে তাদের মুক্তি দেয়।