জাতিসংঘ, ইবোলা ভাইরাসের আক্রমণে সৃষ্ট জ্বরে এখন পর্যন্ত ৯শ’ ৩২ জন মারা গেছে বলে বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই ভাইরাসের আক্রমণের এলাকায় নতুন দেশ হিসেবে সৌদি আরবও এখন যোগ হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিকার কেন্দ্রের পরিচালক ডাক্তার টম ফ্রেইডেন বলেছেন, ইবোলা ভাইরাসের এতো বড় এবং জটিল আক্রমণের ঘটনা ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড়।
নিহতদের সবাই লাইবেরিয়া, সিয়েরা লিওন, গিনির অধিবাসী। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এসব অঞ্চলে আরো অন্তত ১ হাজার ৭শ’ মানুষের ইবোলায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নাইজেরিয়াসহ এসব অঞ্চলে শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্তই ১শ’ ৮টি নতুন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে বলে জানায় সংস্থাটি।
লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট এলেন জনসন সারলিফ বুধবার এই মহামারীর কারণে নব্বই দিনের রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। এক লিখিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, আক্রান্ত এবং নিহত হওয়ার হার মাত্রা ছাড়িয়েছে, যা সরকার বা সংস্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জন্য সামাল দেওয়া খুবই কঠিন। ইবোলাকে তিনি ‘পরিষ্কার বর্তমান বিপদ’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করনে।
এদিকে সৌদি আরবেও এই ভাইরাসের আক্রমণ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। সিয়েরা লিওন ও নাইজেরিয়ায় ভ্রমণের পর এক সৌদি নার্স এবং এক ব্যক্তি মারা গেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া অপর এক ব্যক্তির মারা যাওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনই এই নিহতের ঘটনাকে ইবোলার আক্রমণ বলে ঘোষণা করছে না, সেই সাথে ইবোলায় আক্রান্ত নিহতের পরিসংখ্যানের সাথে যোগ করছে না।
সৌদি ব্যক্তিটি বুধবার জেদ্দায় একটি নিহত বিশেষায়িত হাসপাতালে নিহত হয়েছে বলে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
সিয়েরা লিওন ভ্রমণের পর ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ওই ব্যক্তি। এরপর অবস্থা আশংকাজনক হয়ে পড়লে সোমবার সন্ধ্যা থেকে ওই ব্যক্তিকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয় বলে জানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
নিহত সৌদি নার্সটি নাইজেরিয়ায় পেট্রিক সয়ের নামে এক লাইবেরিয়ান-আমেরিকান ব্যক্তিকে শশ্রুষা দেয়, যে লাইবেরিয়া থেকে ভ্রমণের পর নাইজেরিয়ায় এসে নিহত হয় বলে জানিয়েছে নাইজেরিয়ান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নার্সের নিহত হওয়ার খবর সেদিনই আসে, যেদিন নাইজেরিয়ায় আরো পাঁচজন ইবোলায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে।
এদিকে লাইবেরিয়া থেকে ঘুরে যাওয়ার পর একজন স্প্যানিশও ইবোলায় আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটির সরিকার তাকে ইউরোপের প্রথম ইবোলায় আক্রান্ত ব্যক্তি বলে সনাক্ত করেছে।
ব্রাদার মিগুয়েল পাজারেসকে একটি চিকিৎসার সুব্যবস্থা সম্পন্ন একটি এয়ারবাস এ-৩১০ এ করে মাদ্রিদে লা পায হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্প্যানিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা অঙ্গরাজ্যে ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে দু’জন ইবোলা আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সরকার।
আক্রান্ত দুই ব্যক্তি হলেন ডাক্তার কেন্ট ব্র্যান্টলি এবং ন্যান্সি রিটেবল। তারা লাইবেরিয়ায় ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক চারটি প্রতিষ্ঠান, যা ইবোলার আক্রমণের চিকিৎসা দিতে পারে, ইমোরি তারই একটা।