বিক্ষোভে উত্তাল পাকিস্তান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ দলের সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। দলটির আন্দোলনে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে দেশটি। আন্দোলনকারীদের সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে সরকার। তবে এ আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে নতুন বার্তা দিয়েছেন ইমরান খান।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নেতাকর্মীদের শেষ পর্যন্ত লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ তার মুক্তির আহ্বান জানানো বিক্ষোভকারীদের উপর দমন-পীড়ন করেছে।
মঙ্গলবার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ইমরান খানের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। তারা প্রশাসনের বাধা ও ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানীর দিকে অগ্রসর হতে শুরু করেছেন।
বিক্ষোভকারীরা নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট চুরি, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি এবং সংবিধানের সংশোধনী বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ এবং ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সত্যিকারের স্বাধীনতা ও পাকিস্তানের টিকে থাকার জন্য তাদের এ সংগ্রাম।
এদিকে উত্তেজনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে পিটিআইয়ের সঙ্গে সংলাপের আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা। এছাড়া আন্দোলন ও অস্থিরতার জন্য ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবিকে অভিযুক্ত করে আসছে তারা।
এর আগে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে না নিয়ে ঘরে ফিরবেন না বলে শপথ করেন তার স্ত্রী বুশরা বিবি। তিনি বলেন, সবাই চলে গেলেও ডি-চক তিনি ছাড়বেন না। যদি ছাড়তে হয় তবে তিনিই হবেন শেষ নারী।
ডি-চক অভিমুখে রোড মার্চের একপর্যায়ে দেওয়া বক্তব্যে মিছিলকারীদের উদ্দেশ্যে বুশরা বিবি বলেন, তিনি তার স্বামী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে ব্যতীত ডি-চক ছেড়ে যাওয়া শেষ নারী হবেন।
তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি দিন যে- খান আমাদের সাথে না আসা পর্যন্ত আপনি ডি-চক ছাড়বেন না।
প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি প্রশ্ন তোলেন, আমরা যখন একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম তখন কেন আমাদের ওপর আক্রমণ করা হলো? কেন গুলি ছোড়া হলো? আপনি কি জানেন না খান সত্য ও ন্যায়ের জন্য লড়াই করছেন?
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দেশটির সংবিধানের ২৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী রাজধানী ইসলামাবাদে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিক্ষোভকারী ও বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা বাহিনীকে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনে বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলি চালানোর মতো চরম পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীকে।
কয়েক দিন ধরেই ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা পাকিস্তান। পিটিআই নেতাকর্মীদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে আগামী দুই মাসের জন্য রাজধানী ইসলমাবাদ শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এতে সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পিটিআই কর্মীদের সমাবেশ ঠেকাতে রাস্তাজুড়ে ফেলে রাখা হয়েছে কনটেইনার।