টানা তিন ম্যাচে হার, একজন ফুটবলারের ক্যারিয়ারে এমন কিছু ঘটতেই পারে। বিশেষ করে দলের বাজে সময়ে এ ধরনের বিব্রত অবস্থার ভেতর দিয়ে যাওয়া মোটেই অস্বাভাবিক নয়।
কিন্তু খেলোয়াড়টির নাম যদি হয় লিওনেল মেসি, তখন যে কেউ ভ্রু কুঁচকে তাকাবে। টানা তিন ম্যাচে হার যে মেসির জন্য বিরল ঘটনা। এবার নিজের ক্যারিয়ারে তৃতীয় দফায় এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
গতকাল প্যারাগুয়ের বিপক্ষে তাদের মাঠে হারের আগে মেসি পরপর দুই ম্যাচে হেরেছেন ইন্টার মায়ামির জার্সিতে। সেই হার দুটি ছিল আটলান্টা ইউনাইটেডের বিপক্ষে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) প্লে অফে। কাকতালীয় ব্যাপার হচ্ছে, তিনটি ম্যাচেই হারের ব্যবধান ছিল ২-১। এমনকি আটলান্টার বিপক্ষে হেরে আরও একটি শিরোপা জয়ের সম্ভাবনাও শেষ হয়ে গেছে মেসির।
২০০৪ সালে পেশাদার ফুটবলে যাত্রা শুরুর পর মেসি প্রথম টানা তিন হারের স্বাদ পান ২০১৪ সালে। তখন বার্সার কোচ ছিল জেরার্দো মার্তিনো। তিনটি হারই মেসি পান বার্সার জার্সিতে।
৯ এপ্রিল আতলেতিকো মাদ্রিদের কাছে ১-০ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আট থেকে ছিটকে যায় মেসির বার্সা। এই ম্যাচের আগে প্রথম লেগে ১-১ গোলে ড্র করেছিল কাতালান ক্লাবটি।
এরপর ১২ এপ্রিল গ্রানাদার মাঠে গিয়ে আবার হারের মুখ দেখেন মেসিরা। লা লিগায় সেই ম্যাচে বার্সা হারে ১-০ গোলে। পরের ম্যাচটি বার্সার হারে কোপা দেল রের ফাইনালে। রিয়াল মাদ্রিদের কাছে সেই ফাইনালে হারের ব্যবধান ছিল ২-১।
২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার এমন ঘটনার সাক্ষী হন মেসি। এবারও তিনটি হারে মেসির গায়ে ছিল বার্সেলোনার জার্সি। এবারও সেই ৯ এপ্রিল লা লিগায় মেসির বার্সা ১-০ গোলে হেরে যায় রিয়াল সোসিয়েদাদের কাছে।
৪ দিন পর অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল বার্সা টানা দ্বিতীয় হারের স্বাদ পায় চ্যাম্পিয়নস লিগে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেই ম্যাচে ২-০ গোলে হেরে শেষ আট থেকেই ছিটকে যায় কাতালান ক্লাবটি।
এরপর বার্সা তৃতীয় হারের পর স্বাদ পায় ১৭ এপ্রিল। সেই ম্যাচটিও ছিল লা লিগার। ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচে হারের ব্যবধান ছিল ২-১। এই ম্যাচে মেসি গোল করলেও বার্সা হার এড়াতে পারেনি। ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যুর এই হার মৌসুম শেষে বার্সার হতাশার কারণও হয়েছিল। মাত্র ১ পয়েন্টের ব্যবধানে শিরোপা জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ।
তবে আগের দুইবারের বিব্রতকর রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা এখন কড়া নাড়ছে মেসির দুয়ারে। সে ক্ষেত্রে অবশ্য পেরুর বিপক্ষেও হার হবে মেসির আর্জেন্টিনাকে। তেমন কিছু হলে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো টানা ৪ হারের তিক্ত স্বাদ পাবেন মেসি।
এখন পর্যন্ত টানা হারের সংখ্যা ৩ ম্যাচ না ছড়ালেও জয়হীন থাকার সংখ্যা অবশ্য দুইবার ছয় ছুঁয়েছে। প্রথমবার ২০১৩ সালের মার্চে এবং দ্বিতীয়বার এমন ঘটনা দেখা যায় ২০২১ সালের জুনে।