অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার তপু বর্মণের ভুলে গোলে হজম করে পিছিয়ে পড়ল বাংলাদেশ। সেই ধাক্কা সামলে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল তারা। মজিবুর রহমান জনির নজরকাড়া লক্ষ্যভেদে প্রথমার্ধের শেষদিকে মিলল সমতার স্বস্তি। আর দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে জাল কাঁপিয়ে দলকে বুনো উল্লাসে মাতালেন পাপন সিং। দুই মিডফিল্ডারের কল্যাণে মালদ্বীপকে হারাল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
শনিবার ঘরের মাঠে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে হাভিয়ের কাবরেরা শিষ্যরা। ২৪তম আলি ফাসিরের গোলে এগিয়ে যায় মালদ্বীপ। ৪৩তম মিনিটে জনির নৈপুণ্যে সমতা টানে বাংলাদেশ। এরপর শেষ বাঁশি বাজার কিছুক্ষণ আগে ব্যবধান গড়ে দেন বদলি নামা পাপন।
গত বুধবার একই ভেন্যুতে হওয়া আগের লড়াইয়ে মালদ্বীপের কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল স্বাগতিকরা। অর্থাৎ দুই ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো সমতায়।
শুরুর দিকে কোনো দলই আক্রমণে সুবিধা করতে পারেনি। তবে মালদ্বীপ কিছুটা ভীতি তৈরি করছিল। সেই ধারায় ২৪তম মিনিটে লিড পেয়ে যায় তারা। ভুল পাসে তপু বল তুলে দেন ইব্রাহিম মাহাদির পায়ে। তিনি দ্রুততার সঙ্গে খুঁজে নেন ফাসিরকে। ডি-বক্সে সেই তপুর চাপ সামলেই গড়ানো শটে জাল খুঁজে নেন প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের জয়ের নায়ক ফাসির।
প্রথম ভালো সুযোগের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ৪০তম মিনিট পর্যন্ত। বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে রাকিব হোসেন করেন ক্রস। ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের বুদ্ধিদীপ্ত শট ঠেকান গোলরক্ষক শরিফ হুসেইন। আলগা বলে ফাঁকায় থাকা শেখ মোরসালিন ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি। বল চলে যায় ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে।
তিন মিনিট পর জনি নিয়ে আসেন গ্যালারিভর্তি দর্শকদের জন্য আনন্দের মুহূর্ত। মোরসালিনের পাস ধরে প্রথমে প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে কাটান তিনি। এরপর আরও চারজন খেলোয়াড়ের মাঝ দিয়ে ডি-বক্সের প্রান্ত থেকে দর্শনীয় শট নেন। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়া গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ায় বল।
বিরতির পরপর খেলা চালু হতেই শরিফকে পরীক্ষায় ফেলেন রাকিব হোসেন। দূর থেকে আসা বাম পায়ের বুলেট গতির শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন তিনি। ৫৩তম মিনিটে রিজওয়ান আহমেদের হেড বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমা আটকালেও বিপদ হতে পারত। বল দ্রুত ক্লিয়ার করেন সাদ উদ্দিন।
৮২তম মিনিটে রাকিবের রক্ষণচেরা পাসে দুরূহ কোণ থেকে বাইরের দিকের জাল কাঁপান অভিষিক্ত পিয়াস আহমেদ নোভা। জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথমবার খেলতে নেমে হতাশ করেন তিনি। দুই মিনিট পর নষ্ট করেন সুবর্ণ সুযোগ। শাহরিয়ার ইমনের দূরপাল্লার শট লুফে নিতে পারেননি শরিফ। তার হাত ফসকে একদম ফাঁকায় বল পেয়ে যান নোভা। কিন্তু বিস্ময় জাগিয়ে তার শট পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে চলে যায়।
যোগ করা সাত মিনিটের চতুর্থ মিনিটে আসে সেই কাঙ্ক্ষিত ক্ষণ। বামদিক থেকে ইমনের নিখুঁত ক্রসে গোলমুখে বল পেয়ে যান পাপন। ডান পায়ের শটে তিনি ফাঁকি দেন শরিফকে। উল্লাসে ফেটে পড়ে টইটুম্বুর গ্যালারি।
চলতি বছরে এটি ছিল বাংলাদেশের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আট ম্যাচে দুটি জয়ের বিপরীতে ছয়টি হারের তেতো স্বাদ পেতে হয়েছে তাদের। আগের জয়টি কাবরেরার দল পেয়েছিল গত সেপ্টেম্বরে। ভুটানের বিপক্ষে মোরসালিনের কল্যাণে তারা জিতেছিল ১-০ গোলে। সব মিলিয়ে এই বছরে বাংলাদেশ গোল করেছে তিনটি। হেরে যাওয়া ম্যাচগুলোতে জাল কাঁপাতে পারেনি তারা।