মোটরসাইকেলের জগতে আইকনিক ব্র্যান্ড ‘রয়্যাল এনফিল্ড’ বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে লঞ্চ হয়েছে ব্র্যান্ডের চারটি মডেলের মোটরসাইকেল। তবে কোনো মোটরসাইকেলের দামই ৫ লাখ টাকার ওপরে না।
চলুন ‘রয়্যাল এনফিল্ড’ মোটরসাইকেলটির ইতিহাস, বাংলাদেশে কোন প্রক্রিয়ায় আসছে মোটরসাইকেল ব্র্যান্ডটি এবং কি উপায়ে লাইসেন্সিং ও রেজিশট্রেশনের যাবতীয় সকল বিষয়গুলো জেনে নেয়া যাক।
রয়্যাল এনফিল্ডের ইতিহাস
রয়্যাল এনফিল্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনের যাত্রা শুরু ১২৩ বছর আগে, ইংল্যান্ডে। মূলত সামরিক ব্যবহারের জন্য মোটরসাইকেলটির উৎপাদন শুরু হয়। এটি এখনো চালু থাকা বিশ্বের প্রাচীনতম টু-হুইলার ব্র্যান্ড।
১৯৫০-এর দশকে রয়্যাল এনফিল্ড ভারতের মাদ্রাজ মোটরসের সঙ্গে যৌথভাবে এনফিল্ড ইন্ডিয়া গঠন করে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য বুলেট ৩৫০ মোটরসাইকেল সংযোজন শুরু করে। পরের কয়েক দশকে রয়্যাল এনফিল্ড ভারতীয় মোটরসাইক্লিংয়ের প্রতীক হয়ে ওঠে। যুক্তরাজ্যে ১৯৭০ সালে এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে রয়্যাল এনফিল্ড ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আইশার মোটরসের শতভাগ নিয়ন্ত্রণাধীন। ৫০টিরও বেশি দেশে বিক্রি হয় রয়্যাল এনফিল্ড। ২০২৩ সালে কোম্পানিটির বিক্রি রেকর্ড ৯ লাখ ইউনিট পেরিয়েছে।
২০২৩ সালে ব্রাজিল, থাইল্যান্ড, কলাম্বিয়া ও আর্জেন্টিনার পর নেপালে পঞ্চম সংযোজন কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছে রয়্যাল এনফিল্ড।
বাংলাদেশে রয়্যাল এনফিল্ড
জানা গেছে, রয়্যাল এনফিল্ড উৎপাদনের জন্য কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একটি সর্বাধুনিক উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করেছে ইফাদ মটরস লিমিটেড। এটি স্থানীয়ভাবে বিশ্বমানের মোটরসাইকেল উৎপাদন করতে সক্ষম।
দীর্ঘ দুই দশক ইঞ্জিন সক্ষমতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে রাখার পর ২০২৩ সালে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ৩৭৫ সিসি পর্যন্ত ইঞ্জিন সক্ষমতার মোটরসাইকেলের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশে রয়্যাল এনফিল্ডের দাম শুরু হচ্ছে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা থেকে। যা ভারতীয় মুদ্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার সমান। এই দামে পাওয়া যাবে রয়্যাল এনফিল্ড হান্টার মডেলটি। ক্লাসিক ৩৫০ পাওয়া যাবে ৪ লক্ষ ৫ হাজার বাংলাদেশি টাকায়। বুলেট ৩৫০ পাওয়া যাবে ৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকায় ও মেটিওর ৩৫০ পাওয়া যাবে ৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকায়। যা ভারতীয় মুদ্রায় ৩ লক্ষ ৫ হাজার টাকার সমান। কলকাতা মেটিওর ৩৫০ এর দাম ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ও হান্টার ৩৫০র দাম ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা।
অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রার হিসাবেও দামে প্রায় ৭০ হাজার টাকা ফারাক রয়েছে সীমান্তের ওপারে।
রেজিস্ট্রেশন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স করার প্রক্রিয়া কী?
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের ক্ষমতার সীমা বৃদ্ধি এবং শক্তিশালী ইঞ্জিন ব্যবহারের জন্য নিবন্ধন ফি, ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বাইকার এবং অংশীদারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এটি উচ্চ ইঞ্জিন ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল ব্যবহারের উপর কঠোর নীতি আরোপের ব্যাপারে একজন নাগরিকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ শুধু ১৬৫সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল নিবন্ধন করে অভ্যস্ত। উচ্চতর সিসির মোটরসাইকেলের জন্য মোটরসাইকেল নিবন্ধন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স করার প্রক্রিগুলো তারা এখনো পরিবর্তন করতে পারেনি৷
উত্তরা মোটরসের কর্মকর্তারা জানান, ২৫০সিসির বাজাজ মোটরসাইকেল নিবন্ধন খরচ ১৫০সিসি মোটরসাইকেলের বিআরটিএ কর্তৃক নির্ধারিত নিবন্ধন খরচের সমান।
এছাড়াও বিআরটিএর আইনজীবী রাফিউল ইসলাম জানিয়েছেন, ১৬৫সিসি মোটরসাইকেলের জন্য বর্তমানে যে ড্রাইভিং লাইসেন্স সেটি ব্যবহার করে ২৫০সিসির মোটরসাইকেল রাস্তায় চালানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।