Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

 

ইউরোপের শ্রমবাজারে ৯ লাখ শ্রমিক

chardike-ad

ভাষাশিক্ষাসহ দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৯ লাখ বাংলাদেশি কর্মীকে ইউরোপের শ্রমবাজারে পাঠাতে সক্ষম হবে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভাষাসহ দক্ষ প্রচুর বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলা ড্রিম প্রকল্পের আওতায় চারজন দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে ইতালির রোমে পৌঁছেছেন। আজ শুক্রবার থেকে এসব কর্মী দেশটির রোমস্থ একটি গামেন্ট ফ্যাক্টরির লিংকিং অপারেটর হিসেবে নির্ধারিত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। এসব কর্মী দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতন পাবে। ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসে দীর্ঘদিন যাবত এক লাখ ১০ হাজার ভিসাপ্রত্যাশী ভিসা না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। এসব কর্মীদের ভিসা ইস্যুতে সহজীকরণে কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

দীর্ঘ ৯ মাস ট্রেনিংসহ তাদের দেশটিতে যেতে অভিবাসন ব্যয় হয়েছে তিন লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা। আগামীতে ভাষাসহ ট্রেনিং সম্পন্ন করে ইউরোপে যেতে কর্মীদের শুধু ট্রেনিংয়ের খরচ বহন করতে হবে। তখন এত টাকা অভিবাসন ব্যয় লাগবে না। বাংলা ড্রিম প্রকল্পের চারজন লিংকিং অপারেটর মধ্যে রয়েছেন কিশোরগঞ্জের রুবেল মিয়া, ময়মনসিংহের রাজিব মিয়া ও মনির হোসেন, পঞ্চগড়ের মাহিদুর রহমান। এই চারজন দক্ষ কর্মী হিসেবে ইতালিতে প্রথম যাত্রা শুরু করল।

এদিকে, ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসে দীর্ঘ দিন যাবত এক লাখ ১০ হাজার ভিসাপ্রত্যাশী বাংলাদেশি কর্মী ভিসা না পেয়ে চরম দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। এসব ভিসাপ্রত্যাশী কর্মীর পরিবার-পরিজন চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। ইতালি সরকারের শ্রম-আইন অনুযায়ী, এসব বাংলাদেশি কর্মী বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা লাভ করবেন। ইতালিয়ান ভাষা ও ইউরোপীয়ান স্ট্যান্ডার্ড মেনটেইন করে কর্মীদের প্রস্তুত করার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ১০ লাখ বাংলাদেশি কর্মীকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠাতে সক্ষম হবে। যার ধারাবাহিকতায় বাংলা ড্রিম প্রকল্পের আওতায় চারজন দক্ষ কর্মী ইতালিতে নিরাপদে পৌঁছেছেন।

ইতালিয়ান কোম্পানির চাহিদা মোতাবেক ইতালিয়ান শ্রম মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত বিদেশ থেকে আগত নাগরিকদের স্বদেশে ইতালিয়ান ভাষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক সচেতনতার উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে ইতালিয়ান মালিকের চাহিদা অনুসারে কর্মী নিয়োগের প্রকল্প হচ্ছে বাংলা ড্রিম। ইতালি-বাংলা সমন্বয় উন্নয়ন সমিতির সভাপতি শাহ মোহাম্মদ তাইফুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, দক্ষ জনশক্তি মাধ্যমে ইউরোপে কর্মী প্রেরণের পথ সুগম করতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে একযোগে কাজ করার জন্য ইতোমধ্যেই কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। বাংলাদেশ সরকারের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সাথে ট্রেনিং সেন্টারসমূহে (টিটিসি) আমাদের এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আগামী দিনে বাংলাদেশের তরুণ সমাজের জন্য ইউরোপের বাজারে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করবে। তিনি বলেন, ভাষাসহ কর্মীদের দক্ষতা অর্জন করাতে পারলে আগামী পাঁচ বছরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ৯ লাখ বাংলাদেশি কর্মীকে প্রেরণ করা সম্ভব হবে। এতে রেমিট্যান্স আয়েও অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবে।

বিএমইটির সূত্র জানায়, গত জানুয়ারি থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছয় লাখ ৭৭ হাজার ৬৬৭ জন নারী-পুরুষ কর্মী চাকরি লাভ করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসে দেশটিতে কৃষি খাতসহ বিভিন্ন কাজের জন্য ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট প্রত্যাশী অভিবাসী কর্মীরা দীর্ঘ ছয়-সাত মাস অপেক্ষার পরও অ্যাপয়েন্টমেন্ট না পাওয়ায় নানাবিধ ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন। দ্রæত অ্যাপয়েন্টমেন্ট চালুর মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটাতে ইতালি ও বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনাসহ ইউরোপের যেকোনো দেশে যাওয়ার আগে ভাষা এবং কারিগরি প্রশিক্ষণের উপর জনসচেতনতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মাইগ্রেশন ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (বিএমডিএফ)। বাংলাদেশ মাইগ্রেশন ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (বিএমডিএফ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন জয় বলেন, ল্যাঙ্গুয়েজ, ভোকেশনাল ও কারিগরি দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম অধিকতর জনপ্রিয় করতে এবং প্রশিক্ষণার্থী সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণের মাধ্যমে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে তার অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রবাসী ও অভিবাসী ইস্যুকে সমান গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় আনতে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে।