মোত্তাকিন মুন
শিল্প খাতে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে স্থানীয় বিনিয়োগ। সম্ভাবনাময় দেশীয় প্রসাধনী বা কসমেটিকস শিল্প খাতের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন এই শিল্পের বিকাশে সহায়ক নীতি প্রণয়নে জোরালো সুপারিশ করলেও তা উপেক্ষিত রয়ে গেছে প্রস্তাবিত বাজেটে। ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশকে গুরুত্ব না দেওয়া স্থানীয় শিল্পের জন্য নেতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরাও। যাকে তারা হতাশার সিদ্ধান্ত বলে জানাচ্ছে।
বাংলাদেশে কসমেটিকস খাত এখনো আমদানি ও লাগেজনির্ভর। পাশাপাশি নকল পণ্যে বাজার সয়লাব হচ্ছে। একচেটিয়াভাবে দেশে ঢুকছে মানহীন পণ্য। এতে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। ফলে নানা রোগবালাই দেখা দিচ্ছে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টির জন্য ভেজাল ও মানহীন কসমেটিকস পণ্য দায়ী হলেও তার যথাযথ তদারকি না থাকায় ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছেন।
লাইট ক্যাসেল পার্টনারস এবং অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের মতো গবেষণা সংস্থাগুলোর ভাষ্যমতে প্রায় সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর এই খাতের বাজারমূল্য ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে আমদানিনির্ভর এই শিল্পের পণ্যসমূহ দেশে উৎপাদিত হলে আমদানি-বিকল্প পণ্য হিসেবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। বর্তমানে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্যের তালিকায় রয়েছে ওষ্ঠাধার প্রসাধন, চক্ষু প্রসাধন, হাত, নখ বা পায়ের প্রসাধন, পাউডার, সুগন্ধিযুক্ত বাথ সল্ট এবং অন্যান্য গোসল সামগ্রীসহ সংশ্লিষ্ট প্রসাধনসামগ্রী।
লাইট ক্যাসেল পার্টনারস এবং অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের মতো গবেষণা সংস্থাগুলো আরও বলছে বাংলাদেশের স্কিন কেয়ার বা পারসোনাল কেয়ার শিল্পের আনুমানিক বাজারের আকার ২০২০ সালে ছিল ১ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। ২০২৭ সালের মধ্যে এর আকার ২ দশমিক ১২ বিলিয়নে পৌঁছাবে বলে আশা করছে তারা। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ৮ দশমিক ১ শতাংশ হারে এই শিল্প বৃদ্ধি পাবে।
এ খাতের প্রস্তাবিত সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স বাংলাদেশ’-এর সভাপতি আশরাফুল আম্বিয়া বলেন, বর্তমানে কতিপয় মানহীন ও ভেজাল পণ্যের ছড়াছড়ির খবর প্রায়ই দেখা যায়। এসব ভেজাল পণ্য ব্যবহার করে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন। পড়ে যাচ্ছেন বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। তাই স্থানীয় উৎপাদনকে নীতিগত বাণিজ্যিক সহায়তা দিয়ে মানসম্মত পণ্য ক্রেতাদের জন্য সুলভ করা প্রয়োজন।