Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
CUET
ক্যাম্পাস বন্ধের প্রতিবাদে জব্দ করা বাসে আগুন দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
ছবি সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক।

সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় – চুয়েট এর দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আন্দোলনের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভের চারদিনের মাথায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

chardike-ad

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, গত ২২ এপ্রিল মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন মেধাবী ছাত্রের অকাল মৃত্যুতে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে আজ ২৫ এপ্রিল উপাচার্য মহোদয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫১তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্তক্রমে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষাসহ) বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ছাত্রদেরকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে এবং ছাত্রীদেরকে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলো। শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ত্যাগের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ক্যাম্পাস থেকে শহর গমনাগমন করবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ক্ষোভ জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়ক অবরোধের পাশাপাশি তাঁদের জব্দ করা একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চুয়েট শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, এই সিদ্ধান্ত ছাত্রছাত্রীদের দমানোর জন্য নেওয়া হয়েছে। আন্দোলন বন্ধ করার জন্য কেউ হল ছাড়বে না, সবাই ক্যাম্পাসে অবস্থান করবে। এ সময় কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করেন কিছু শিক্ষার্থী। বর্তমানে ক্যাম্পাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এর আগে গত সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকাল ৪টার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের সেলিনা কাদের চৌধুরী কলেজ গেট সংলগ্ন জিয়ানগর এলাকায় শাহ আমানত পরিবহন নামের একটি বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং তৌফিক হোসেন নিহত হন। এ ঘটনায় জাকারিয়া হিমু নামে আরো এক শিক্ষার্থী আহত হন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিহত শান্ত সাহা এবং তৌফিক হোসেন – দুজনেই চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ২০ এবং ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। জাকারিয়া হিমু একই বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় গতকালই ঘাতক শাহ আমানত পরিবহন বাসের চালক তাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ।

দুই শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে আজ দীর্ঘ চারদিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সড়ক অবরোধ করছেন। ১০ দফা দাবিতে তাঁদের এই অবস্থান চলছে‌।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে মামলার মাধ্যমে তৌফিক ও শান্ত হত্যার বিচার করতে হবে, ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ শাহ আমানত বাস কর্তৃপক্ষকে আহত চুয়েট ছাত্র হিমুর সব চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে হবে, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কে শাহ আমানত ও এবি ট্র্যাভেলস সহ সব লোকাল বাস চলাচল বন্ধ করতে হবে, চুয়েটে বাস পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করতে হবে এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে হবে, চুয়েট মেডিকেল সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।