গত কয়েক দশকে কোরিয়া প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে তার অস্তিত্ব জানান দিয়েছে। পাশাপাশি সংস্কৃতি রপ্তানিতে হয়ে উঠেছে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। কোরিয়ান নাটক, সিনেমার জনপ্রিয়তা তো বটেই বিশেষ ধরনের কোরিয়ান পপ সংগীতও হয়ে উঠেছে বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়। এ ধরনের পপ সংগীত বিশ্বব্যাপী কে-পপ নামে পরিচিত।
আকর্ষণীয় সুর, মনোমুগ্ধকর কোরিওগ্রাফি, দুর্দান্ত সব ভিজ্যুয়াল জয় করে নিয়েছে বিশ্বব্যাপী লাখো মানুষের মন। স্বাভাবিকভাবেই কোরিয়ার অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়েছে এর।
কোরিয়ান অর্থনীতিতে ট্যুরিজম, ফ্যাশন, কসমেটিকস, প্রযুক্তি ইত্যাদি নানা খাতে প্রভাব রেখেছে কে-পপ। এখন যারা তরুণ তারা কিশোর বয়সে নিশ্চয়ই পিএসওয়াই এর গাংনাম স্টাইল গানের সাথে মাথা দুলিয়েছেন। পিএসওয়াই এর পরে বিটিএস, ব্ল্যাকপিংক, এক্সোর মত গানের দলগুলো বিশ্বব্যাপী নজড় কেড়েছে।
কোরিয়ান অর্থনীতিতে এই দলগুলোর সবচেয়ে বড় ভূমিকা সম্ভবত ট্যুরিজমে। এই দলের সদস্যদেরকে দেখতে, কন্সার্ট দেখতে কিংবা তাদের স্কুল, বাড়ি-ঘর দেখতেও প্রতি বছর অসংখ্য ট্যুরিস্ট আসে কোরিয়াতে। কোরিয়ান ট্যুরিজম অর্গানাইজেশনের মতে কেবল ২০১৯ সালে কে-পপ সম্পর্কিত ট্যুরিজম থেকে আয় হয়েছে ১.৩ বিলিয়ন ডলার।
ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতেও দাফট দেখাচ্ছে কে-পপ। সুদর্শন বা সুন্দরের নতুন রোলমডেল হচ্ছেন কে-পপ তারকারা। তাই বড় বড় ব্র্যান্ডগুলো বিজ্ঞাপন বা প্রচারের জন্য যুক্ত হচ্ছে এই তারকাদের সাথে। ফলে দেশে ও আন্তর্জাতিক দুই অঙ্গনেই বেড়েছে কোরিয়ান ফ্যাশনের কদর।
বাদ যায়নি কোরিয়ান কসমেটিকস ইন্ডাস্ট্রিও। কে-বিউটির যে ট্রেন্ড এসেছে কে-পপের মধ্য দিয়ে সেটাকে ভালোভাবেই কাজে লাগাচ্ছে কসমেটিকস ইন্ডাস্ট্রি। ডিওসেল, ডক্টর জি, মার্যি, ইনিসফ্রি এর মত কোরিয়ান কসমেটিকস ও মেক-আপ ব্র্যান্ডগুলোর পণ্য বিক্রি বেড়েছে বিশ্বব্যাপী।
কে-পপের প্রভাব শুধু ট্যাঞ্জিবল (দৃশ্যমান) পণ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এর অবদান সফট পাওয়ার, সাংস্কৃতিক কূটনীতির মত ইনট্যাঞ্জিবল জায়গায়ও কোরিয়াকে এগিয়ে নিচ্ছে।