জন্মহার আর বিয়ে নিয়ে অন্ধকার কিছুতেই কাটছে না সূর্যোদয়ের দেশ জাপানে। দেশটিতে এই নিয়ে টানা আট বছর শিশু জন্মহার কমেছে। সেইসাথে সেখানে চোখে পড়ার মতো কমেছে বিয়ের সংখ্যাও।
জানা গেছে, গত আট বছরের মধ্যে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি কমেছে শিশুজন্ম। জাপানে বিয়ের হারও আগের তুলনায় কমেছে। মঙ্গলবার জাপানে জন্ম ও বিয়ের হারের এই প্রাথমিক তথ্য সরকারি তরফে প্রকাশ করা হয়েছে। হিসাবে দেখা গিয়েছে, আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে শিশু জন্মহার রেকর্ড ৫.১ শতাংশ কমেছে। ২০২৩ সালে জাপানে ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬৩১ শিশুর জন্ম হয়েছে।
জাপানের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সে দেশে ২০২৩ সালে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ২৮১টি বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে দেশটিতে বিয়ের হার কমেছে ৫.৯ শতাংশ। ৯০ বছরের মধ্যে জাপানে এবারই প্রথম এক বছরে বিয়ের সংখ্যা ৫ লাখের নীচে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় সেখানে জনসংখ্যা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিম্ন জন্মহার দুশ্চিন্তায় ফেলেছে জাপানকে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা জাপানের ক্রমহ্রাসমান জন্মহার মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, জাপানে জন্মহার বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। এখন ব্যবস্থা না নিলে দেরি হয়ে যাবে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি রিসার্চের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৭০ সাল নাগাদ জাপানের জনসংখ্যা বর্তমানের তুলনায় ৩০ শতাংশ কমে ৮ কোটি ৭০ লাখে দাঁড়াবে। এ সময় প্রতি ১০ জনের ৪ জনের বয়স হবে ৬৫ বা তার বেশি। বর্তমানে জাপানের জনসংখ্যা সাড়ে ১২ কোটির বেশি।
গত কয়েক বছর ধরেই জাপানের সাধারণ মানুষকে জন্মহার বাড়াতে নানা প্রণোদনা জুগিয়ে যাচ্ছে জাপান সরকার। বেশি সন্তান নিলে নগদ অর্থ-সহ জনগণকে নানা সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে জাপান। সমীক্ষা অনুযায়ী, শিশুর লালন-পালনের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশগুলির একটি জাপান। ঠিক এই কারণেই সেখানে অনেক দম্পতিই সন্তান নিতে চাইছেন না।