নভেল করোনাভাইরাস যেখানে সারাবিশ্বে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, তখন শুরু থেকেই কড়া নিয়ম-নীতি আর চমৎকার ব্যবস্থাপনায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। করোনা মোকাবিলায় তাদের সাফল্য প্রশংসা কুড়িয়েছে সারাবিশ্বেই। কিন্তু হঠাৎ করেই গত সপ্তাহে দেশটিতে আবারও করোনার বিস্তার বাড়তে থাকে।
তবে এর ভয়াবহতা খুব বেশি ছড়াতে দেয়নি দক্ষিণ কোরিয়া। দ্রুতই সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরেছে তারা। টানা দু’দিন দেশটিতে নতুন রোগীর শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫০-এরও কম।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৪৭ জন। এদের মধ্যে ১৭ জনই বিদেশফেরত।
জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৩৩১ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ১৯২ জন। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৬ হাজার ৬৯৪ জন।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, বিশ্বের যে কোনও দেশের তুলনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা পরীক্ষার হার সবচেয়ে বেশি। দেশটিতে প্রতিদিন অন্তত ১৫ হাজার মানুষের করোনা টেস্ট করা হচ্ছে।
সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের মেডিকেল টেস্ট সম্পূর্ণ ফ্রি করে দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। চিকিৎসকরা রেফার্ড করলে সন্দেহভাজন রোগীরা বিনামূল্যেই টেস্ট করাতে পারছেন। বাকিদের জন্যেও সাশ্রয়ী মূল্যে মেডিকেল টেস্টের ব্যবস্থা করেছে সেখানকার সরকার। দেশটির শতাধিক হাসপাতাল-ক্লিনিকের পাশাপাশি করোনাভাইরাস টেস্টে প্রায় অর্ধশত ভ্রাম্যমাণ ল্যাবরেটরিও কাজ করছে।
নাগরিকদের সংগৃহীত তথ্য ব্যবহার করে সহজেই ভাইরাস সংক্রমণের উৎস নির্ধারণ, আক্রান্ত বা সন্দেহভাজনদের চিকিৎসা ও কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করছে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ। কোন এলাকায় ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি, এমনকি কোন দোকান বা রেস্টুরেন্টে গিয়ে কেউ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাও এসএমএসের মাধ্যমে স্থানীয়দের জানিয়ে দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব তথ্য ব্যবহার করেই করোনা সংক্রমণের হার আশ্চর্যজনকভাবে নিয়ন্ত্রণে রেকেছে দক্ষিণ কোরিয়া।
সূত্র: বিবিসি