প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল সিলেট ও কুমিল্লা। ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়েক লাখ সিলেটি বসবাস করছেন। তাদের সিংহভাগই বিদেশে গেছেন বৈধপথে। কিন্তু অবৈধপথে পা বাড়ানোর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।
বিশেষ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দেয়ার স্বপ্নে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ছেন সিলেটের অসংখ্য তরুণ-যুবক। তাদের অনেকেই দুর্গম যাত্রা পাড়ি দিয়ে স্বপ্নের দেশে পা রাখতে পারলেও বেশিরভাগের স্বপ্নই দুঃস্বপ্নে পরিণত হচ্ছে।
সম্প্রতি লেবানন থেকে তুরস্ক হয়ে গ্রিসে যাওয়ার পথে রাসেল নামে এক বাংলাদেশি মারা গেছেন। রাসেল কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বড় বামিশার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। জানা গেছে, তুরস্ক সীমান্ত থেকে একটি প্রাইভেটকারে পেছনের ডিকিতে করে রাসেল রওনা দেন। পথেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে সে মারা যায়। তার সঙ্গে একইভাবে মারা যান আরও ২ জন। তাদের বাড়ি সিলেটে। পুলিশের মাধ্যমে দেশটির সীমান্তের কাছে একটি জঙ্গল থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে গ্রিস দূতাবাস ও স্থানীয় নেতারা।
জানা গেছে, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বড় বামিশা গ্রামের আবু সাঈদ রাসেল গত ৪ বছর ধরে লেবানন থাকতেন। সেখান থেকে দালালের মাধ্যমে গ্রিসে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন। প্যারিসের এক প্রবাসী জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাসেল ও অন্যরা একটি প্রাইভেট কারে করে রওয়ানা দেন। রাসেল ও সিলেটের নিহত ২ জনকে প্রাইভেটকার পেছনের ডিকিতে নেওয়া হয়।
গ্রিস সীমান্তের ৭৬ কিলোমিটার কাছে আসার পর প্রাইভেটকারের পেছনে ডিকিতে থাকা তিনজন শ্বাসকষ্টে চিৎকার করতে থাকেন এবং গাড়ির সিটে ও বডিতে আঘাত করতে থাকেন। কিন্তু চালক গাড়ি না থামিয়ে চলতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা মারা যায়। পরে গাড়ি থামিয়ে রাস্তার পাশে জঙ্গলে তিন জনের লাশ ফেলে যায়। গাড়িতে থাকা অন্যরা গ্রিসে পৌঁছে যায়।
গ্রিস প্রবাসী কামরুল হাসান জানান, দূতাবাসের মাধ্যমে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। একটি বেসরকারি সংস্থাকে লাশগুলো গ্রিসে নিয়ে আসার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সোমবার লাশগুলো আনা হতে পারে। তারপর দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়টি তিনি তদারকি করছেন।
নিহত মো. আবু সাঈদ রাসেলের ছোটভাই হাফেজ বাহার মিয়া জানান, তার ভাই রাসেল মাদরাসায় পড়াশোনা করেছে। গত চার বছর ধরে সে লেবাননে ছিল। সেখান থেকে গ্রিসে যেতে চেয়েছিল। গ্রিস দূতাবাস থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।