থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কক থেকে চীনের সাংহাইগামী একটি বিমানের এক নারী যাত্রীর কাশি দেয়াকে কেন্দ্র করে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়েছেন থাই এয়ারওয়েজের কর্মীরা। সাংহাইয়ে বিমানবন্দরে নামার পর করোনাভাইরাস পরীক্ষার আগে বিমানের ভেতর ওই নারী যাত্রী কাশি দিতে শুরু করলে তার মুখ চেপে ধরে কাশি থামাতে বাধ্য করেন বিমানের কর্মীরা।
থাই এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার পর একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার সাংহাই বিমানবন্দরে বিমান অবতরণের পর করোনাভাইরাসের পরীক্ষার জন্য কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। তার আগে বিমানবন্দরে বিমানের ভেতরে ওই নারী যাত্রী অপেক্ষার ক্ষোভ থেকে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের মুখের কাছে বারবার কাশি দিতে শুরু করেন। সাংহাইয়ের পুডং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় ৭ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করার সময় এ ঘটনা ঘটে।
থাই এয়ারওয়েজ বলছে, নারী অ্যাটেনডেন্টের মুখের কাছে বারবার কাশি দেয়ার ঘটনার পর বিমানের অন্য স্টাফরা এগিয়ে এসে ওই যাত্রীর অস্বাভাবিক আচরণ বন্ধের চেষ্টা করেন। তাকে পরিস্থিতি বুঝিয়ে করোনার পরীক্ষায় সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, ওই যাত্রীর সঙ্গে বিমানের কর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। ওই যাত্রী বলেছেন, বিমানের কর্মীরা তার মুখ চেপে ধরে কাশি থামানোর চেষ্টা করেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানের একজন পুরুষ কর্মী এগিয়ে এসে ওই নারী যাত্রীর ঘাড় ধরে সিটে বসতে বাধ্য করেন। এ সময় আরও দু’জন পুরুষ অ্যাটেনডেন্ট পাশে দাঁড়িয়ে ইংরেজিতে ওই যাত্রীকে তার আসনে বসার জন্য ধমক দিতে থাকেন।
পরে চীনা ভাষায় ওই নারী যাত্রী জানতে চান, আমি কি করেছি? থাই এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ রয়েছে এমন দেশ যেমন- ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং ইরানের যাত্রীরা সাংহাই পৌঁছালে অবশ্যই তাদের করোনা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। বিমানের ভেতরে যাত্রীদের পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিমানের দরজা খোলার অনুমতি নেই। সর্বোচ্চ সংক্রমিত এসব এলাকার যাত্রীসংখ্যা কত, তার ওপর নির্ভর করে পরীক্ষার সময়।
তবে বিমানের ভেতরে ওই নারী যাত্রীদের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে একজন লিখেছেন, বিদেশিদের সামনে এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত লজ্জাজনক।
আরেকজন লিখেছেন, আমার মনে হচ্ছে বিমানের অ্যাটেনডেন্টরা মোটামুটি ভদ্র আচরণ করেছেন। অপর এক ব্যক্তি উইবোতে লিখেছেন, তাকে বের করে দেয়া উচিত ছিল। তবে ওই বিমানের একজন যাত্রী লিখেছেন, একজন নারীকে থামানোর জন্য তিনজন পুরুষের এগিয়ে আসাটা ঠিক ছিল না।