দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র সিঙ্গাপুরে আরও ৯ জন চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬ জন গ্রেস অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া দেশটিতে চার প্রবাসী বাংলাদেশিও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সিঙ্গাপুরের জাতীয় দৈনিক দ্য স্ট্রেইট টাইমসের অনলাইন প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজকের ৬ জনসহ উল্লিখিত চার্চে যাওয়ার কারণে ১৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আজ শুক্রবারের দেয়া হিসাব অনুযায়ী সিঙ্গাপুরে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন ৬৭ জন—চীনের পর যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
আজকে নতুন করে যে ৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন তাদের মধ্যে একজন দেশটির পাবলিক ইউটিলিটি বোর্ড এবং আরও একজন দেশটির পরিবেশ ভবনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী গান কিম ইয়ং এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করেছে সরকার।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সিঙ্গাপুরে আরও দুই বাংলাদেশি নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে গতকাল স্ট্রেইট টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। দেশটিতে মোট চার প্রবাসী বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক পাসধারী ৩৭ ও ৩০ বছর বয়সী আরও দুই বাংলাদেশিকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। ৩৭ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশির সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক পাস রয়েছে। সম্প্রতি চীন সফরের কোনও ইতিহাস নেই তার। বর্তমানে তাকে সিঙ্গাপুরের এনসিআইডির আইসোলেশন কক্ষে রাখা হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত এই বাংলাদেশিও সেলেটার অ্যারোস্পেস হাইটসের নির্মাণাধীন স্থাপনায় কাজ করতেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি তার শরীরে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায়। পরে ১১ ফেব্রুয়ারি তাকে অ্যাম্বুলেন্সে ট্যান টক সেং হাসপাতালে পাঠানো হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি নিশ্চিত হয়।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নতুন করে করোনায় আক্রান্ত ৩০ বছর বয়সী বাংলাদেশিরও সম্প্রতি চীন সফরের রেকর্ড নেই। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে তার শরীরে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তিনিও সিঙ্গাপুরের এনসিআইডির আইসোলেশন কক্ষে রয়েছেন। সেলেটার অ্যারোস্পেস হাইটসের নির্মাণাধীন স্থাপনায় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার নতুন করে ১২২ জনসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা এখন ১৩৮১। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬৪ হাজার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের এই ভাইরাসকে গোটা বিশ্বের জন্য মারাত্মক হুমকি অভিহিত করে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে।