নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। প্রাণঘাতী এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জাপানে এই প্রথম রোগীর মৃত্যু হলো। ৮০ বছরের ওই বৃদ্ধা জাপানের কানাগাওয়া জেলার বাসিন্দা। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাত দিয়ে জাপানি পত্রিকা মেইনিচি শিমবুন আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
বুধবার শেষরাতের দিকে এক ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কাৎসুনোবু কাতু বলেন, ‘ওই নারীর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া এবং মৃত্যুর বিষয়টি এখনও অস্পষ্ট রয়েছে। ২২ জানুয়ারি তার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো ধরা পড়ে এবং ১ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে তিনি যে করোনায় আক্রান্ত ছিলেন তা মৃত্যুর পর নিশ্চিত হওয়া গেছে।’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, রাজধানী টোকিওতে এক ট্যাক্সিচালকের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ওই চালককে উদ্ধৃত করে একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, তার গাড়িতে সম্ভবত কোনো চীনা যাত্রী উঠেছিলেন এবং তার থেকে তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চেষ্টা চালিয়ে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মেইনিচি শিমবুন পত্রিকা জানিয়েছে, জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ওয়াকাইয়ামায় একজন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সবমিলিয়ে দেশটিতে এখন করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৫০ জন।
এদিকে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৫ জন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অন্তত তিন হাজার ৭০০ যাত্রী নিয়ে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে এ প্রমোদতরী।
অন্যদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্বের বাকি দেশগুলোর জন্য ভয়াবহ হুমকি হতে পারে। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগের নাম দেওয়া হয়েছে কোভিড-১৯ (COVID-19)।
নতুন এই ভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগ এখন থেকে কোভিড-১৯ নামেই পরিচিত হবে। ভাইরাসটির নামের CO দিয়ে করোনা, VI দিয়ে ভাইরাস, D দিয়ে ডিজিজ (রোগ) এবং 19 দিয়ে ২০১৯ সালকে নির্দেশ করা হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো নতুন এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে।
এখন পর্যন্ত চীনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১০৭ জন। অপরদিকে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ১৩৮ জন। তবে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই এবং এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করতে জেনেভায় এক সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এদিকে চীনের বাইরে হংকং এবং ফিলিপাইনে দু’জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।