রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় দোষী সাব্যস্ত পাকিস্তানের সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল (অব.) পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছেন দেশটির বিশেষ আদালত। ২০০৭ সালে সংবিধান লঙ্ঘন করে দেশে জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের হয়েছিল প্রায় অর্ধযুগ আগে (২০১৩ সালে)। মঙ্গলবার সাবেক পাক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ এই সাজা ঘোষণা করা হয়।
বিশেষ আদালতের এই মামলার শুনানি করেন তিন সদস্যের বিচারকের একটি প্যানেল। বিচারকদের এই প্যানেলে ছিলেন পেশওয়ার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার শেঠ, সিন্ধু হাইকোর্টের বিচারপতি নজর আকবর এবং লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি শহীদ করিম।
দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকারের পক্ষে আইনজীবী আলী জিয়া বাজওয়া সাবেক এই সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন।
বাজওয়া বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ, আব্দুল হামিদ দোগার ও জাহিদ হামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে চায় সরকার। একসঙ্গে সব অভিযুক্তের বিচার করা উচিত। সাবেক স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফের এই সহযোগীদেরও বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন পারভেজ মোশাররফ। রাষ্ট্রদ্রোহ, জরুরি অবস্থা জারি, বেআইনি উপায়ে বিচারপতি বরখাস্ত, বেনজির ভুট্টো হত্যা এবং লাল মসজিদ তল্লাশি অভিযান-সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি মামলায় বর্তমানে পলাতক সাবেক এই পাক সেনাপ্রধান।
২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগে দেশটির আদালতে মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হয়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে আদালতে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হয়। সংবিধান লঙ্ঘন করে জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ মোশাররফকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত।
একই বছরের সেপ্টেম্বরে আদালত সাবেক এই স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ বিশেষ আদালতের কাছে হস্তান্তর করেন। বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘ হওয়ার সুযোগে ২০১৬ সালের মার্চে দেশ ত্যাগ করেন সাবেক এই পাক প্রেসিডেন্ট। আদালতের অনুমতি নিয়েই তিনি দেশ ছাড়েন সেই সময়। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছেন তিনি।
সংবিধান লঙ্ঘন করে জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগে পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার এই মামলা করেছিল পাকিস্তানের তৎকালীন ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সরকার।
সূত্র : ডন, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।