Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

britain-bangladeshiব্রিটেনের বর্তমান পার্লামেন্টে আইন প্রণেতা হিসেবে রয়েছেন বিরোধী লেবার পার্টি থেকে তিন ব্রিটিশ বাংলাদেশী নারী- রোশনারা আলী, টিউলিপ সিদ্দিক ও রূপা হক। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনেও এই তিন এমপির মনোনয়ন চূড়ান্ত। তাদের বাইরে আরও চার জন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নারী এমপি হওয়ার লড়াইয়ে নেমেছেন।

এদের মধ্যে ডাঃ আনোয়ারা আলী কনজারভেটিভ পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন টাওয়ার হ্যামলেটসের সাবেক কাউন্সিলর রাবিনা খান ও কার্ডিফের সাবেক কাউন্সিলর বাবলিন মল্লিক। এদিকে পূর্ব লন্ডনের পপলার ও লাইম হাউজ থেকে আপসানা বেগম লেবার পার্টি থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন।

chardike-ad

ব্রিটেনে সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচন হয়েছে ২০১৭ সালের ৮ জুন। সেই হিসেবে ২০২২ সালের ৫ মে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে ব্রেক্সিট সঙ্কটকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ১২ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন করতে আগ্রহী। নির্বাচন এগিয়ে আনতে পার্লামেন্টে ভোটাভুটির আয়োজন করতে চান তিনি।

এদিকে বিরোধী দল লেবার পার্টির পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের উদ্যোগ নিলে তাতে সম্মত হবে তারা। সব মিলে ব্রিটেনে এখন নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রোশনারা আলী লন্ডনের বেথনাল গ্রিন ও বো আসন থেকে লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়ে আসছেন ২০১০ সাল থেকে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এই প্রথম বাংলাদেশী নারী আইনপ্রণেতা এবারও তার দলের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন। বাংলাদেশী অধ্যুষিত তার নির্বাচনী এলাকাটি লেবার পার্টির নিরাপদ আসন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ২০১৫ সালে লন্ডনের হ্যামস্টেড ও কিলবার্ন আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই পার্লামেন্টের ভেতরে-বাইরে সাড়া ফেলতে সক্ষম হন ক্যামডেনের সাবেক এই কাউন্সিলর। এবারও নিজ দল থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন এই প্রার্থী।

স্পষ্টবাদী হিসেবে পরিচিত আরেক ব্রিটিশ বাংলাদেশী রূপা আশা হক ২০১৫ সালে বিরোধী লেবার পার্টি থেকে লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল ও একটন আসন থেকে প্রথমবার আইনপ্রণেতা নির্বাচিত হন। আগামী নির্বাচনে তার প্রার্থিতাও চূড়ান্ত করেছে লেবার পার্টি।

রোশনারা , টিউলিপ আর রূপা ছাড়াও এবার লন্ডনের হ্যারো ওয়েস্ট আসন থেকে কনজারভেটিভ পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর ডাঃ আনোয়ারা আলী। সর্বশেষ নির্বাচনে একই দল থেকে টাওয়ার হ্যামলেটসের প্রার্থী ছিলেন তিনি। তার পরিবারের আদি নিবাস সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। তার আসনটি কনজারভেটিভ পার্টির ভোটব্যাংক হিসেবে পরিচিত।

লন্ডনের কেনজিংটন অ্যান্ড চেলসি আসন থেকে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন টাওয়ার হ্যামলেসের সাবেক কাউন্সিলর রাবিনা খান। তিনি টাওয়ার হ্যামলেটসের সর্বশেষ নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতার মূল লড়াইয়ে ছিলেন। একই দল থেকে কার্ডিফ সেন্ট্রাল আসনের মনোনীত প্রার্থী মৌলভীবাজারের মেয়ে ডাঃ বাবলিন মল্লিক। কার্ডিফে বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য শেকড় নামে একটি বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন বাবলিন। তিনি কমিউনিটিতে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সেখানকার কাউন্টি কাউন্সিলের প্রথম বাঙালি ও মুসলিম নারী হিসেবে গত কাউন্সিল নির্বাচনে বিপুল ভোটে কাউন্টি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এই নারীকে এমপি প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে তার দল।

পূর্ব লন্ডনের পপলার ও লাইম হাউজ আসনে লেবার পার্টির দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়ার সব ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন আপসানা বেগম। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থেকে ব্রিটেনে স্থায়ী আবাস গড়া আপসানা জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। পপলার এন্ড লাইম হাউজ আসন লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান, মোমেন্টামের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটিং গ্রপের সদস্য ও লন্ডন লেবার পার্টির লন্ডন রিজিয়নের বোর্ড মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কমিউনিটির বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। বিশেষ করে চলতি বছরের শুরুতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল কমিউনিটি ল্যাগুয়েজ সার্ভিসের বাজেট সম্পুর্ণভাবে কেটে ফেলতে চাইলে একটি জোরালো ক্যাম্পেইন গড়ে উঠে। এতে আপসানা বেগম গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করেন। এর আগে কর্তৃপক্ষ টাওয়ার হ্যামলেটসের তিনটি ডে নার্সারি বন্ধের ঘোষণা দিলে এ ব্যাপারেও তিনি সোচ্চার ভুমিকা পালন করেন। মূলত এসব ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি কমিউনিটির মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন।