সৌদিতে নির্যাতনে নিহত নাজমার লাশ ৫৩ দিন পর দেশে এসে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার লাশ এসে পৌঁছায়। লাশগ্রহণ করে রাতেই মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা।
২ সেপ্টেম্বর সৌদিতে মৃত্যু হয় নাজমার। অমানসিক নির্যাতনে নাজমার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে স্বজনরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে নাজমা টেলিফোনে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে স্বজনদের কাছে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলেন।
ফোনালাপে নিহত প্রবাসী শ্রমিক নাজমা বলেন, ‘আমি জায়গায় মরে যামু। আমি আর কুলাতে পারছি না। আমি মরে গেলে তো আমার পোলা-মাইয়ার চেহারাও দেখতে পামু না। আল্লাহ আমি এখন কি করমু?’ জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নাজমার ছিল আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার আকুতি। ছিল দেশে ফেরার শতচেষ্টা।
কিন্তু দালালের হাত-পায়ে ধরেও হতভাগ্য নাজমাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারেনি দরিদ্র পরিবারটি। এমনকি সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে নাজমার মরদেহ পড়ে থাকলেও দেশে আনতে পারছিলেন না।
পরে ২ অক্টোবর বেসরকারি একটি টেলিভিশনে একটি প্রতিবেদন প্রচার হলে স্থানীয় প্রশাসন লাশ আনার ব্যাপারে উদ্যোগী হন। নানা প্রক্রিয়া শেষে প্রায় ৫৩ দিন পর নাজমার মরদেহ দেশে ফিরল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের গৃহবধূ নাজমা ১১ মাস আগে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। হাসপাতালে ক্লিনারের চাকরি দেয়ার কথা বলে তাকে পাঠানো হলেও কাজ দেয়া হয় বাসাবাড়িতে। সেখানে তাকে যৌন নির্যাতনসহ নানাভাবে নির্যাতন করা হতো।