সফলতার পেছনে অদম্য ইচ্ছাশক্তি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা শ্রীকান্ত পান্তাওয়ান নামের এক যুবক দেখিয়ে দিলেন। শ্রীকান্তের জীবন কাহিনী পড়লে যে কেউ অনুপ্রাণিত হবে।
একসময় তিন চাকার অটোরিকশা চালাতেন শ্রীকান্ত পান্তাওয়ান । দেখতেন তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে বিমান। হয়তবা তখন থেকেই আকাশযান চালানোর স্বপ্ন দেখতেন। নিজের এই অসামাণ্য স্বপ্নকে পুঁজি করেই দৃঢ় ইচ্ছা শক্তি, অক্লান্ত পরিশ্রম আর অধ্যবশায়ের ফলেই আজ আকাশে ভাসছেন তিনি।
সোমবার টুইটারে শ্রীকান্তের এই ব্যতিক্রমী কাহিনী প্রকাশ করেছে ইন্ডিগো।
শ্রীকান্ত পান্তাওয়ানের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা নাগপুর শহরে। তার বাবা ছিলেন সামান্য বেতনের গার্ড। তাই সংসারের প্রয়োজনে অল্পবয়সেই রোজগারে নামতে হয়েছিল শ্রীকান্তকে। স্কুলের খরচ জোগাতে কিশোর বয়সেই খাবার সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করতে হয়েছে। একটু বড় হওয়ার পর শুরু করেন তিন চাকার ড্রাইভারিং ।
ভাগ্যক্রমে বিমানবন্দরের খাবার সরবরাহ কাজটিই যেন তার স্বপ্ন পূরণের সিড়িঁ হিসাবে কাজ করতে লাগল। এই কাজটি করতে গিয়েই তিনি বৈমানিকদের বৃত্তি কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে পারেন। ভারতের ‘ডিরেকটর জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন’ নিয়মিত ওই বৃত্তি কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে। শ্রীকান্ত ওই বৃত্তির জন্য আবেদন করেন এবং মধ্যপ্রদেশের এক বিমান চালনা (ফ্লাইং স্কুল) প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন। সেখানে প্রতিটি পরীক্ষাতেই সর্বোচ্চ নম্বর পেতেন শ্রীকান্ত।
কিন্তু বৈমানিক হওয়ার স্বপ্ন পাড়ি দেয়া তো অত সহজ নয়। তাই ফ্লাইং স্কুল থেকে পাস করার পরও তার অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো না। বাণিজ্যিকভাবে বিমান চালনার লাইসেন্স পাওয়ার পর তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করতে শুরু করলেন। পাশাপাশি পাইলট পদে নিয়োগের জন্য বিভিন্ন কোম্পানিতে দরখাস্ত করতে লাগলেন। অবশেষ এল সেই মহেন্দ্রক্ষণ। ভারতের বেসরকারি বিমান কোম্পানি ইন্ডিগোতে বিমানচালক হিসেবে নির্বাচিত হলেন শ্রীকান্ত। তিনি বর্তমানে ওই কোম্পানিতে সেকেন্ড পাইলট বা কো পাইলট হিসেবে কাজ করছেন। এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে শ্রীকান্তকে। আকাশ পথে তার অদম্য অভিযান সবে শুরু।