বাংলাদেশসহ দেশের বাইরে বর্তমান সময়ের টক অব দ্য টাউন ঢালিউড অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার রুবেল হোসেনের সঙ্গে তার প্রেমকাহিনি নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। এবার হ্যাপি তাদের প্রেমের সবকিছু খুলে বললেন বেসরকারি রেডিও ঢাকা এফএমে। গত ২১ ডিসেম্বর রোববার ঢাকা এফএমে ‘অন্ধকারের গল্প’ শিরোনামের একটি অনুষ্ঠানে হ্যাপি তার প্রেমের গল্প শোনান। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাইজিংবিডির অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক উজ্জল জিসান ও বিনোদন প্রতিবেদক রাহাত সাইফুল।
এ অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রে আগমন, অভিনয়জীবন, আগামীর কাজসহ রুবেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের নানা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন তিনি। হ্যাপির এ বক্তব্যের কিছু চুম্বক অংশ ভিডিওসহ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
এ সময় নিজের সম্পর্কে হ্যাপি বলেন, ‘আমার প্রথম মুভি কিছু আশা কিছু ভালোবাসা। মোস্তাফিজুর রহমান মানিক সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন। তিনিই আমাকে চলচ্চিত্রে পা রাখার সুযোগ করে দিয়েছেন। প্রথমে আমি পরিবারের কাছ থেকে সাপোর্ট পাইনি। কারণ আমার পরিবার রক্ষণশীল। তাই চুরি করে শুটিং করতাম। আমার প্রথম মুভি মধুমিতা হলে গিয়ে দেখি। সেখানে দর্শকরা আমাকে অনেক সাপোর্ট দেয়।’
হ্যাপি বলেন, ‘প্রথমে আমার মধ্যে প্রেম কখনোই আসত না। আমার তেমন ছেলেবন্ধুও ছিল না। ছেলেদের সঙ্গে তেমন মেশাও হয়নি। প্রচুর ছেলে বন্ধু আমাকে ডিস্টার্ব করত। কোনো ছেলে আমাকে সামনে এসে বলতে পারেনি যে আমাকে ভালোবাসে।…ফেসবুকে রুবেলের সঙ্গে আমার পরিচয়। দুজনেরই গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট। রুবেল যে খেলোয়াড় তা আমি প্রথমে জানতাম না। আমি তেমন ক্রিকেট বুঝি না। এমনকি কখনো মাঠে গিয়ে খেলা দেখিনি। সর্বশেষ আমি জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচটি দেখি। আমি ক্রিকেট খেলা তেমন দেখি না। অনেকে হয়তো ভাবেন, ওর খেলা দেখে আমি ওকে ভালোবেসেছি, কিন্তু তা নয়। একটা সময় রুবেল আমার ফোন নাম্বার চায়। আমি প্রথমে দিতে চাইনি। পরে দিয়েছি।’
হ্যাপি বলেন, ‘প্রথমে ও অনেক কল করত। এতে আমি বিরক্ত হতাম। ভাবতাম, একটা ছেলেবন্ধু ঠিক আছে, কিন্তু এতবার কেন ফোন করবে? তবে একসময় ওর ফোন না করলে আমার ভালো লাগত না। বন্ধুত্বের কিছুদিন পরেও আমার সঙ্গে অনেক ধরনের পাগলামি করত। আর ওর পাগলামি থেকেই ওর প্রতি আমার ভালোবাসাটা জন্মেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভালোবাসা শুরু হয়। ভালোবাসা আমার জীবনের সর্বনাশা। ও আমাকে বাবু বলে ডাকত। আমি রাগ করলেই ও কান্না করত। ওর কান্না দেখে আমার অনেক ভালো লাগত। ভাবতাম, ছেলেটা আমাকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু রুবেলের সবকিছুই এখন আমার ফেক মনে হয়।’
হ্যাপি বলেন, ‘এ রকম চলতে থাকে আমাদের প্রেম। একদিন আমি ওকে ফোন দেই। ফোন ধরে ও (রুবেল) আমার সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করে। আমি জানতে চাই, তুমি কোথায়? রুবেল বলে, “আমি আছি, মাইয়্যাদের লইয়া আছি।”
‘এরপর আমি মিরপুরের একটি বাড়িতে গিয়ে দেখি, রুবেলের সঙ্গে দুটি মেয়ে একটি রুমে ড্রিংক করছে। এ সময় সাব্বির নামে ওর এক বন্ধুও ছিল। তখন ওই অবস্থা দেখে আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিলাম না। ওইদিন রুবেল আমাকে অনেক মারধর করে। তাই আমি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেই। সামনে রুবেলের মদের একটি কাচের বোতল ছিল। আমি সেটা ভেঙে নিজের হাত কাটতে চাইলে ওর বন্ধু সাব্বির আমাকে বাধা দেয়। পরে আমি রান্নাঘরে গিয়ে আত্মহত্যার জন্য ছুরি খুঁজতে থাকি। এ সময় রুবেল আবারও আমার গায়ে হাত তোলে। এ সময় আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। পরের দিনে সকালে আমি উঠে দেখি ও সেই মেয়ে দুটিকে নিয়ে শুয়ে আছে। তখনই আমি ওর বাসা থেকে চলে আসি।’
তিনি এই রেডিওকে বলেন, ‘আমি যখন প্রথম মামলা করতে যাই, তখন কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড় তার পক্ষ নিয়ে আমাকে অনেক কিছু বোঝায়। তারা আমাকে বিষয়টি সমঝোতা করে মিটিয়ে ফেলতে বলে। আমি রুবেলকে অনেক ভালোবাসতাম। সে কারণে সে সময় মামলা করা থেকে বিরত থাকি।’
হ্যাপি বলেন, ‘আমরা হাসব্যান্ড-ওয়াইফের মতো ছিলাম।’
অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে এসে হ্যাপি আবেগঘন কণ্ঠ বলেন, ‘আল্লাহর পরে আব্বু-আম্মু এবং এরপরই আমার কাছে রুবেলের স্থান।…রুবেলকে সব সময়ই পাশে চেয়েছি।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে হ্যাপি আরো বলেন, এত কিছুর পরেও ওকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে। ওর কথা শুনতে ইচ্ছে করে।
হ্যাপির কথোপকথনের ভিডিও লিংক:
সৌজন্যেঃ রাইজিংবিডি